Apan Desh | আপন দেশ

মাউশির চিঠিতে ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা রাজপথেই থাকবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:২৪, ১৯ জুলাই ২০২৩

মাউশির চিঠিতে ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা রাজপথেই থাকবেন

ছবি : আপন দেশ

বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে টানা নবমদিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তারা।

আন্দোলন চলা অবস্থায় মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) করোনার শিখনঘাটতি রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিতে কঠোর নির্দেশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। কিন্তু ওই নির্দেশনায় আরও ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

বুধবার (১৯ জুলাই) সকালে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন শিক্ষকরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রেসক্লাবের সামনে ফুটপাতে বসে বক্তব্য দিচ্ছেন শিক্ষক নেতারা। আর কদম ফোয়ারা থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত শিক্ষকরা অবস্থান করে হাততালি ও স্লোগান দিচ্ছেন। তাদের এই আন্দোলনের ফলে তোপখানা সড়কের পল্টন-কদম ফোয়ারা এবং কদম ফোয়ারা-পল্টন মোড় অংশে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে এই পথে চলাচল করা যানবাহনগুলোকে আব্দুল গণি সড়ক ব্যবহার করে চলাচল করতে হচ্ছে। আর ভোগান্তিতে পড়ছেন ওই পথের যাত্রীরা।

বাসযাত্রী খায়রুল আলম বলেন, প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তা বন্ধ। তাই মৎস্যভবন পর্যন্ত রাস্তা জ্যাম হয়ে গেছে। শুনলাম এই বাস সচিবালয়ের সামনে দিয়ে ঘুরে জিরো পয়েন্ট মোড়ে যাবে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে আবার অফিসে আসতে হবে আমাকে। শহরে এরকম আন্দোলন-সমাবেশ সত্যিই ভোগান্তির।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ডাকে গত ১১ জুলাই থেকে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষকেরা। 
শিক্ষকদের এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত রোববার ও সোমবার সারাদেশে ক্লাস বন্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। লাগাতার অবস্থানের একপর্যায়ে সোমবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মাউশির মাধ্যমিক ও কলেজ শাখা পরিচালক, একজন উপপরিচালক ও পুলিশের কয়েকজন সদস্য। 

টানা আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে শিক্ষক প্রতিনিধিদের দাবির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা এবং আলোচনা করে সমাধানের আশ্বাস দেন মাউশি মহাপরিচালক। এ সময় তিনি চলমান আন্দোলন স্থগিতের জন্য শিক্ষক নেতাদের অনুরোধ করেন। তবে বৈঠক থেকে বের হয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির নেতারা।

এদিকে মঙ্গলবার মাউশি পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) শাহেদুল কবির স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ বলা হয়, দৈনন্দিন শিখন-শেখানো ও মূল্যায়ন কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিতে শিক্ষকের এবং তা পর্যবেক্ষণে প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিয়মিত উপস্থিতি অপরিহার্য। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে- কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও কোনো কোনো শিক্ষক নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করছেন। পাশাপাশি এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডিরও কোনোরূপ নজরদারি না থাকায় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়, করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়নি। ফলে এখন সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাস নেয়াসহ গভীর নজর দেয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকদের অনিয়মিত উপস্থিতি এ কার্যক্রমসহ শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ ক্ষুণ্ন করছে।

বিটিএ'র সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, আমাদের দাবি সুস্পষ্ট। আমরা দাবি আদায় না হলে মাঠ ছাড়ব না। দাবি নিয়েই সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হচ্ছে। আলোচনা চলমান অবস্থায় মাউশি যে চিঠি দিয়েছে তা শিক্ষকদের আরও উত্তেজিত করেছে। যে শিক্ষকরা স্কুলে তালা দিয়ে ঢাকায় এসেছে তাদের চিঠি দিয়ে ক্লাসে ফেরানো সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি নিয়ে আজ শিক্ষামন্ত্রী সঙ্গে বসার কথা রয়েছে। তবে কখন, কোথায় বসা হবে তা এখনো জানানো হয়নি।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়