Apan Desh | আপন দেশ

‘আন্তর্জাতিক অ্যাকুয়াকালচার ও সি ফুড শো’

দেশের মৎস খাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:০৩, ১০ জুন ২০২৩

আপডেট: ১৯:২৯, ১০ জুন ২০২৩

দেশের মৎস খাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী 

ছবি : সংগৃহীত

দেশের মৎস্য খাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

শনিবার (১০ জুন) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকুয়াকালচার অ্যান্ড সীফুড শো-২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অবহিতকরণ কর্মশালা ও প্রেস মিটে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, আগামী ১৯ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকুয়াকালচার ও সি ফুড শো ২০২৩ আয়োজন করা হচ্ছে। এটি হবে দেশের মৎস্য খাত নিয়ে সবচেয়ে বড় পরিসরের একটি আয়োজন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশে এ আয়োজন অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

মন্ত্রী জানান, এ আয়োজন বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে, দেশের চাহিদা পূরণে এবং দেশে বিদেশি বিনিয়োগের একটা নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। এখানে জার্মানি, স্পেনসহ অন্যান্য দেশের মাছ আমদানি কারক, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা আসবেন। তাদের কাছে আমাদের মৎস্য খাতের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরতে হবে। মাঠ পর্যায়ে তাদের কাজ করার সুযোগ ও ক্ষেত্র তুলে ধরতে হবে। মৎস্য খাতের সঙ্গে প্রত্যক্ষও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্তদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। সরকার এ আয়োজনে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা দেবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেরা কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় আমরা বিশাল সমুদ্র সীমা জয় করতে পেরেছি। আমাদের জলজসম্পদের এলাকা বিস্তৃত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় সমপরিমাণ আয়তনের সমুদ্রসীমা আমরা পেয়েছি। সমগ্র বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মিলে সম্মিলিতভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি চমৎকার জায়গা।

তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগের জন্য এত বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ পৃথিবীতে খুব কমই আছে। এখানে সহজে শ্রমিক পাওয়া যায়, এখানে প্রাকৃতিক সম্পদ আছে, কাঁচামাল আছে, সরকারের সঠিক ব্যবস্থাপনা আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে যেসব বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছেন, সেখানে বিদেশি বড় বিনিয়োগ কারীরা বিনিয়োগ করতে পারছে। 

বিদেশি বিনিয়োগের জন্য মৎস্য খাত বড় সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য কতটা বন্ধুত্বপূর্ণ জায়গা সেটা সারা বিশ্বে তুলে ধরতে হবে। আমাদের দেশে বিদেশিরা অনেকে বিনিয়োগ করছেন এবং অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। সে আগ্রহের ক্ষেত্র নানা ধরণের শিল্প হতে পারে। বিনিয়োগকারীদের উৎসে কর, বাইরে থেকে আমদানিকৃত মেশিনারিজের ওপর আরোপিত করসহ নানারকম কর অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে। এভাবে সরকার সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাচ্ছে। এই সুযোগ-সুবিধার কথা বিদেশিদের কাছে পৌঁছে দেয়া দরকার।

দেশের মৎস্য খাতের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে এ সময় মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে প্রায় ৬০ ভাগ প্রাণিজ আমিষের যোগান দিচ্ছে মাছ। প্রতিদিন মাথাপিছু ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে আমরা ৬৭ দশমিক ৮ গ্রাম মাছ গ্রহণ করছি। রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ও পৃষ্ঠপোষকতা এবং বেসরকারি উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসার কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে করোনাকালে বিশ্বের যে ৩ টি দেশ মৎস্য উৎপাদনে সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ তার অন্যতম।

মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ের মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ ৩য়, ইলিশ উৎপাদনে ১ম এবং বদ্ধ জলাশয়ের মাছ উৎপাদনে ৫ম। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে মাছের উৎপাদন ছিল ২৭ দশমিক ১ লাখ মেট্রিক টন যা ২০২১-২২ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ৪৭ দশমিক ৫৯লাখ মেট্টিক টন। একই সময়ে ইলিশের উৎপাদন ২ লাখ ৯৯ হাজার মেট্টিক টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫ লাখ ৬৭ হাজার মেট্টিকটনে উন্নীত হয়েছে। এভাবে মৎস্য খাতে অভাবনীয় ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ইলিশ এবং ২০২২ সালে বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ি জিআই সনদ লাভ করেছে।

করোনা সংকটেও মৎস্য খাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে, যাতে এ খাতে ক্ষতিগ্রস্তরা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। ফলে বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশ মৎস্য উৎপাদনের সক্ষমতা সাফল্যের সঙ্গে দেখাতে সক্ষম হয়েছে। যোগ করেন মন্ত্রী।  

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. তপন কান্তি ঘোষ এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ।

আপন দেশ/জেডআই/এবি
 

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ