Apan Desh | আপন দেশ

ইউবিএসের দর ১০ শতাংশ কমেছে

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:০৯, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

ইউবিএসের দর ১০ শতাংশ কমেছে

ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি সুইস সরকার ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছে। এরপর ইউবিএসের শেয়ার দর এখন পর্যন্ত ১০ শতাংশ কমেছে। ফলে গত বছর ক্রেডিট সুইস কেনার পর ইউবিএস যে বড় অঙ্কের মুনাফা করেছিল, এ ধাক্কায় তা অনেকটা কমে গেছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

ইউবিএসের অতিরিক্ত তারল্য সংরক্ষণের বিষয়ে সুইজার‌ল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী কারিন কেলার সাটার বলেন, এ হিসাব আপাতগ্রাহ্য। আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে এ নিয়ে আরও বিস্তারিত প্রতিবেদন দেয়া হবে।

এদিকে ক্রেডিট সুইসের পতনের এক বছর পর সুইস সরকার বলেছে, সব ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং করদাতাদের অর্থে যেন বেইল আউট করতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে ইউবিএসের আরও ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হতে পারে।

কিন্তু এ তথ্য ইউবিএসকে ক্ষুব্ধ করেছে। তারা বলছে, তাদের হাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আছে। একই সঙ্গে তারা সতর্ক করে দিয়েছে, এ ধরনের প্রস্তাব বৈশ্বিক ঋণদাতা হিসেবে সুইজারল্যান্ডের প্রভাব খর্ব করতে পারে।

ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারদের উদ্দেশে বক্তৃতা দেয়ার সময় ইউবিএসের চেয়ারম্যান কোলম কেহেলের বলেছেন, এ আলোচনার বিষয়ে তিনি গুরুতরভাবে উদ্বিগ্ন; এতে তারা আরও বেশি হারে নগদ ও নগদে দ্রুত পরিণত করা যায়, এমন সম্পদ ধরে রাখতে বাধ্য হতে পারেন। সমাধান হিসেবে অতিরিক্ত শেয়ার সংরক্ষণ ভুল কাজ।

ক্রেডিট সুইসের প্রসঙ্গে ইউবিএসের চেয়ারম্যান বলেন, যে ব্যবসার মডেল ভেঙে পড়েছে, তার কোনো আইনি সমাধান হতে পারে না। গত বছর সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে ইউবিএস ক্রেডিট সুইসকে কিনে নেয়। তখন সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, এটা করা না হলে বিশ্বজুড়ে আর্থিক সংকট ছড়িয়ে যেতে পারত।

এ কেনাবেচা নিয়ে সুইজারল্যান্ডে অনেক তর্কবিতর্কের জন্ম হয়। ক্রেডিট সুইসও ছিল মহিরুহ ব্যাংক; ইউবিএস এ ব্যাংক কিনে নেয়ার পর দেখা গেল, এ দুই ব্যাংকের সম্মিলিত সম্পদমূল্য সুইজারল্যান্ডের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) চেয়ে বেশি। তবে কোলম কেলেহের বিশ্বাস করেন, এ চুক্তির মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার জগতে সুইজারল্যান্ডের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে।

ইউবিএসের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ইউবিএস বড় ব্যাংক; কিন্তু তার মানে এ নয় যে তার পতন হতে পারে না। এটি ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ শেয়ারসম্পন্ন ব্যাংক। ফলে ২০ হাজার কোটি ডলারের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার মতো সামর্থ্য তার আছে।

মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস আইন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন কোলম কেলেহের। তিনি বলেন, শেয়ার কমে যাওয়ার কারণে গত বছরের এক সপ্তাহান্তে ক্রেডিট সুইসকে বিক্রি হতে হয়নি।

ক্রেডিট সুইসের বিক্রি হয়ে যাওয়া ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কেনাবেচার চুক্তি। কিন্তু সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউবিএসকে যেসব পরামর্শ দিয়েছে, তাতে বিশ্লেষক ও শেয়ারহোল্ডাররা এ কেনাবেচার বিষয়ে পুনর্চিন্তা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে গত বুধবার জুরিখের শেয়ারবাজারে ইউবিএসের শেয়ারমূল্য প্রায় ৩ শতাংশ কমে গেছে।

খাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের এ অবস্থানের বিষয়ে ইউবিএসের শেয়ারহোল্ডারদের উদ্বেগ যৌক্তিক। তাদের উদ্বেগের কারণ হলো, ব্যাংক যত বেশি নগদ সংরক্ষণ করবে, ততই শেয়ারহোল্ডারদের মুনাফা কমে যাবে।

গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে আমানতকারীরা ক্রেডিট সুইস থেকে ৬ হাজার ৮৬০ কোটি ডলার তুলে নেয়। এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়, ব্যাংকটি কেমন চাপে পড়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ও সিগনেচার ব্যাংক থেকেও গ্রাহকেরা আমানত তুলে নেয়ার কারণে দেশটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্যাংক দুটি বন্ধ করে দেন। একই পরিণতি হতে পারত ক্রেডিট সুইসের; কিন্তু সময়মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপের কারণে তা এড়াতে পেরেছে ব্যাংকটি। দেশটির আরেক বৃহৎ ব্যাংক ইউবিএস ক্রেডিট সুইসকে কিনে নেয়।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ