Apan Desh | আপন দেশ

হাতিরপুলের আগুন নিয়ন্ত্রণে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:৪৭, ১৪ মার্চ ২০২৪

হাতিরপুলের আগুন নিয়ন্ত্রণে

ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারের কাছে রাজ কমপ্লেক্স নামের ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট আজ বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে আগুনে কেউ হতাহত হননি। ওই ভবনে আটকে পড়া ছয়-সাতজনকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, আজ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগে। সেখানে একটি কার্পেটের গুদাম ছিল। মুহূর্তের মধ্যে আগুন পুরো তলায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

এটি আগুন নাকি নাশকতা, তা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ভবনের মালিকদের একজন। ওই ভবনের ছয়তলায় থাকে একটি পরিবার। তাদের ভাষ্য, তারা ইফতার প্রস্তুত করছিলেন। এমন সময় হঠাৎ আগুনের ধোঁয়া দেখতে পান। পরে তারা ভবনের ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করেন।

বাসিন্দারা আরও জানান, ভবনটির চারজন মালিক। ভবনের সামনের অংশ বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। আর পেছনের অংশে থাকতেন মালিকদের কেউ কেউ। সম্প্রতি মালিকদের একজন তার অংশ একটি টেইলারিং কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। ওই কোম্পানি পুরো ভবন কিনে দিতে অন্য মালিকদের চাপ দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেন তারা।

ভবনের মালিকদের একজন খুকু মনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই কোম্পানি আমার অংশ কিনে নিতে ৬০ লাখ টাকার প্রস্তাব দিয়েছে। আমি রাজি হইনি।’ এটি আগুন নাকি নাশকতা, সেটা তদন্ত করে দেখার দাবি জানান তিনি।

আরও পড়ুন <> হাতিরপুলে আগুন: ছাদ থেকে উদ্ধার ৪

ভবনটির চারতলার বাসিন্দা সোহেলুর রহমান। তিনি নিজে একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। আগুনের সময় তিনি ছিলেন না বাসায়। তবে তার পুরো পরিবারের সদস্যরা আগুনের সময় ভেতরে অবস্থান করছিলেন। সোহেলুর রহমানের ছেলে ফিদাক রহমান বলেন, আগুনের খবরে আমরা ছাদে অবস্থান নিতে যাই। কিন্তু সেখানে কেচি গেট আটকা ছিল। বাধ্য হয়ে সেটি লাথি দিয়ে ভেঙে আমরা ছাদে অবস্থান করি এবং চিৎকার করে আমাদের উদ্ধার করার কথা জানাই৷ পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিস আমাদের উদ্ধার করে।

তিনি বলেন, ভবনটির একেক ফ্লোরের মালিক একাধিক বলে আমি জানি। তবে কমার্শিয়াল হিসেবে ভবনের পুরো সামনের অংশটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। বলতে পারেন ভবনের সামনের অংশটি পুরোটাই গোডাউন। 

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক আনোয়ারুল হক বলেন, ভবনটির দ্বিতীয় তলায় আগুন লেগেছিল। এটি মূলত একটি কার্পেটের গোডাউন। রাবারের যে কার্পেটগুলো আছে, সেগুলো এখানে ভরপুর মজুদ রয়েছে। একই সঙ্গে এখানে কাপড়ও আছে। 

তিনি বলেন, এখানে কোনো ভেন্টিলেশন সিস্টেম নেই। আমরা দুই পাশ দিয়ে দেয়াল ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেছি। আগুনের সূত্র বের করতেই সময় লেগেছে। কারণ ভেতরে পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা ছিল না। আগুনে কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তসাপেক্ষে বিষয়টি বলা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে আগুন লাগার কারণও তদন্ত করে বলা সম্ভব। আগুন সম্পূর্ণভাবে নির্বাপণ করার পর কী কারণে আগুন লেগেছে, সেটি আমরা বের করব।

তিনি আরও বলেন, ফায়ার সার্ভিসের প্রথম কাজ হচ্ছে একটি ভবনে আগুন লাগার পর সেটি নির্বাপণ করা। আর এতে কী সমস্যা আছে বা না আছে, সেটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বের করবেন।

আনোয়ারুল হক বলেন, ভবনটি অনেক লম্বা; সামনে কমার্শিয়াল স্পেস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে বোঝা যাচ্ছে। পেছনের অংশে অনেকগুলো ফ্ল্যাট, যেখানে একটি পরিবার ছিল বলে আমরা জেনেছি। যাদেরকে আমরা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এখানে ফায়ার এক্সিট ছিল না।

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়