Apan Desh | আপন দেশ

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:২৭, ৮ অক্টোবর ২০২৩

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২০

ছবি: সংগৃহীত

আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের হেরাত প্রদেশে আঘাত হানা শক্তিশালী ছয় দশমিক তিন মাত্রার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৩২০ ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও শত শত মানুষ।

শনিবার (৭ অক্টোবর) আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের কারণে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে ১২টি গ্রাম। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে রোববার (৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

পাজওক আফগান নিউজ জানিয়েছে, আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে বেশ কয়েকটি ভূমিকম্পে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে হেরাতের স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশে ওই ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের পর পাঁচটি বড় ধরনের আফটারশক হয়েছে; যার কেন্দ্রস্থল ছিল ওই অঞ্চলের বৃহত্তম শহরের কাছে। কর্মকর্তাদের মতে, জিন্দা জান ও ঘোরিয়ান জেলার ১২টি গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)-এর তথ্য অনুসারে, পশ্চিম আফগানিস্তানে ছয়টি ভূমিকম্প হয়েছে এবং যার মধ্যে সবচেয়ে বড়টি ছিল ছয় দশমিক তিন মাত্রার। সংস্থাটি বলছে, শনিবার আঘাত হানা ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল হেরাত শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে। এই ভূমিকম্পের পর দেশটিতে পাঁচ দশমিক পাঁচ, চার দশমিক সাত, ছয় দশমিক তিন, পাঁচ দশমিক নয় ও চার দশমিক ছয় মাত্রার পাঁচটি শক্তিশালী আফটারশক অনুভূত হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ফারাহ ও বাদঘিস প্রদেশেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

ভূমিকম্পে অনেক ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রধান মুসা আসহারি। 

আরও পড়ুন <> পিকে হালদারসহ ১৪ জনের মামলার রায় আজ

তালেবান সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভূমিকম্প শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হেরাতের বাসিন্দা ও দোকানদাররা ভবন থেকে রাস্তায় নেমে আসেন। এ সময় তাড়াহুড়ো করে গিয়ে অনেকে আহত হয়েছেন।

হেরাতের ৪৫ বছর বয়সী এক বাসিন্দা বশির আহম এএফপিকে বলেন, আমরা অফিসে ছিলাম। সেই সময় ভবন কেঁপে ওঠে। দেয়ালের প্লাস্টার খুলে নিচে পড়ে যায় এবং দেয়ালে ফাটল ধরে। ভবনের কিছু অংশ ধসে পড়ে। তিনি আরও বলেন, মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় আমি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমি খুব চিন্তিত এবং ভীত। এটি অত্যন্ত ভয়াবহ ব্যাপার।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, হেরাত প্রদেশের রাজধানী হেরাত শহরে ১৯ লাখ মানুষের বসবাস রয়েছে। হেরাতের পূর্বাঞ্চলে ১২০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে ইরানের সঙ্গে। এই শহরটিকে আফগানিস্তানের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে মনে করা হয়।

এর আগে গত বছরের জুনে আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে পাঁচ দশমিক নয় মাত্রার এক ভূমিকম্পে এক হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। গত কয়েক দশকের মধ্যে আফগানিস্তানে সেটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প ছিল বলে সেই সময় জানায় দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া চলতি বছরের মার্চে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় সাড়ে ছয় মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই ভূমিকম্পে দুই দেশে অন্তত ১৩ জন নিহত হন।

মূলত হিন্দুকুশ পর্বতমালা ও ইউরেশীয়-ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের কাছে অবস্থান হওয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে আফগানিস্তান।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

শীর্ষ সংবাদ: