Apan Desh | আপন দেশ

শাহ সুলতান কলেজে ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় মামলা

বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:২১, ২০ আগস্ট ২০২৩

আপডেট: ১৮:১৭, ২০ আগস্ট ২০২৩

শাহ সুলতান কলেজে ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় মামলা

ছবি : সংগৃহীত

বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের (এইচএসসি) শিক্ষার্থীদের ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় প্রতারকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে মামলায় গ্রেফতার দেখানো তিন আসামিকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। 

এর আগে শনিবার (১৯ আগস্ট) রাতে রাশাদুল ইসলাম নামে ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বাদী হয়ে শাজাহানপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় গ্রেফতার তিনজন হলেন, শাজাহানপুর উপজেলার লতিফপুর দক্ষিণপাড়ার হারুনুর রশিদ, বগুড়া সদর উপজেলার জিগাতলার আমিনুর রহমান ও ইসলামপুর হরিগাড়ীর আব্দুল হান্নান। তারা সবাই শাহ সুলতান কলেজের অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত।

শনিবার বিকেলে আমিনুর রহমান ও হারুনকে র‍্যাব আটক করে নিয়ে যায়। আর আব্দুল হান্নানকে আটক করে শাজাহানপুর থানা পুলিশ। পরে তাদের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

এ মামলায় অপর এজাহার নামীয় আসামি শাজাহানপুরের ওমরদীঘি চন্দ্রহাটা গ্রামের কাওছার আলী (২৪)। এছাড়া আরও ৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। কাওছার শাহ সুলতান কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি নিজেকে কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী ও অফিস স্টাফ পরিচয় দিতেন।

আরও পড়ুন: পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে দেখেন তারা কলেজের শিক্ষার্থীই না

মামলায় বলা হয়, ১ নম্বর আসামি হারুনের সহায়তায় অন্য আসামিরা রাশাদুল ইসলামের কাছে এইচএসসি প্রথম বর্ষে ভর্তির কথা বলে ৫০ হাজার টাকা ও মার্কশিট নিয়েছিলেন। একইভাবে হাবিবা আক্তার ও সাব্বির হোসেনের কাছে ২০ হাজার এবং মিলনের কাছে ১৮ হাজার টাকা নেন অভিযুক্তরা। তাদের মার্কশিট, রেজিস্ট্রেশন, প্রশংসাপত্র নিয়ে রাখে হারুন। এই টাকা নেয়ার পর ভুক্তভোগীদের রোল নম্বর দেয়া হয়। সেই সুবাদে ওই শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষাগুলো দেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য প্রত্যেকের কাছে ৫ হাজার টাকা করে আদায় করেছেন অভিযুক্তরা। কিন্তু তারা পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেননি। প্রবেশপত্র চাইলে বিভিন্ন অজুহাত দেখানো হতো ওই শিক্ষার্থীদের।

পরবর্তীতে গত ১৭ আগস্ট এইচএসসি পরীক্ষার দিনে শিক্ষার্থীরা কলেজে গিয়ে হারুন ও অন্যদের কাছে গিয়ে প্রবেশপত্রের জন্য চাপ দেয়। তখন কলেজের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে তাদেরকে দেয়া রোল নম্বরগুলো ভুয়া। কাগজে তাদের ভর্তির কোনো নথি নেই।

চার নম্বর আসামি কাওছারের বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন বলেন, কাওছার আমার আপন ফুফাতো ভাই। সে নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী, অফিস স্টাফ পরিচয় দিতো। আমার কাছে টাকা ও মার্কশিট, রেজিস্ট্রেশন কার্ড কাওছারই নিয়েছিল। এরপর আর তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি। ফোন ধরে না, ফেসবুকে ব্লক করে রেখেছে।

শাহ সুলতান কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান বলেন, কাওছার এই কলেজে এইচএসসি শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের কেউ না। এখন তো কলেজের শিক্ষার্থীও না। ও পুরোই প্রতারক। 

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন শাজাহানপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, গতকাল রাতে মামলাটি হয়েছে। মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামিকে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। আর কাওছার নামে একজন পলাতক রয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার উচ্চ মাধ্যমিক (এইসএসসি) পরীক্ষার দিতে না পেরে ২০জন শিক্ষার্থী শাহ সুলতান কলেজে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করে। পরে তাদের সঙ্গে কথা বলে ভর্তির নামে প্রতারণার ঘটনাটি উঠে আসে। কলেজে উপস্থিত চার শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছে কলেজের কয়েকজন অফিস সহকারী। এদের মধ্যে হারুনুর রশিদে সবাই মূল অভিযুক্ত বলে উল্লেখ করেন। কলেজের উপাধ্যাক্ষ মো. রেজাউন নবীও ভর্তি জালিয়াতির বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন। পরবর্তীতে ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রচারের পর কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ