Apan Desh | আপন দেশ

মানাস নদে চলছে ধানের চাষাবাদ

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

মানাস নদে চলছে ধানের চাষাবাদ

ছবি : সংগৃহীত

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় গজঘণ্টা এলাকা থেকে মৌভাষা পর্যন্ত মানাস নদের প্রায় তিন কিলোমিটারে চলছে ধানের চাষাবাদ। পলি জমে নদের তলদেশ ভরাট হওয়ায় এতে পানিপ্রবাহ নেই। এদিকে ধান চাষের ফলে নদের জমি বেদখল ও নিশ্চিহ্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

মানাস নদ গজঘণ্টা বাজার এলাকায় তিস্তা নদীর শাখা থেকে উৎপত্তি হয়েছে। এটি কাউনিয়া উপজেলার বালারঘাট এলাকায় পুনরায় তিস্তা নদীতে মিলেছে। এই নদের কিছু এলাকা রংপুর সিটি করপোরেশনের মধ্যেও পড়েছে।

মানাস নদের গজঘণ্টা এলাকা থেকে মৌভাষা পর্যন্ত এলাকা শুকনা মৌসুমে চাষাবাদ করা হয়। এবারো নদের পাশের গুলালবুদাই, কইপাড়া, বকশা, হৈরম্মল, বড় রূপাই, গজঘণ্টা, কাগজিপাড়া, মৌভাষাসহ আটটি গ্রামের বাসিন্দারা সেখানে চাষাবাদ শুরু করেছেন।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নদে পানিপ্রবাহ নেই। মাঝেমধ্যে নদে পানি থাকলেও সেখানে বাঁশের বেড়া দেওয়া। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্ষাকালে বাঁশের চাটাই দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে মাছ ধরা হয়। এলাকাভেদে নদের প্রস্থ ৮০-১০০ ফুট। মানাস নদের ভেতর প্রতিবছর ধানের চাষ করায় ধীরে ধীরে নদের তলদেশ ভরাট হয়ে উঠেছে।

রংপুর সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গুলালগুদাই এলাকায় আবুল হোসেন, মজিবর রহমান, দুলাল মিয়া, আল আমিন নদের মধ্যে ধান চাষ করেছেন। 

আল আমিন বলেন, ‘এই আবাদ করা জমিগুলো আমাদেরই। নদী (নদ) ভাঙতে ভাঙতে এখন আমাদের জমির ওপর দিয়ে বর্ষাকালে পানি প্রবাহিত হয়ে থাকে। এভাবে বছরের পর বছর ধরে শুষ্ক মৌসুমে এখানে আমরা ধানের আবাদ করি।’

আরেক কৃষক মজিবর রহমান বলেন, ‘এই সময়টা হামরাগুলো প্রতিবছরই নদীত (নদ) ধানের আবাদ করি। বর্ষাকালে মাছ মারি। কেননা, এই জমি এলাকার জনগণের, যা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে।’

আরও পড়ুন <> মিশ্র ফল চাষে অনন্য তোয়ো ম্রো

গঙ্গাচড়ার মর্ণেয়া ইউনিয়নের কাগজিপাড়া এলাকার হায়দার হোসেন, আনিসার রহমান, মকবুল হোসেনসহ অনেকেই এভাবে নদের মধ্যে ধানের চাষ করেছেন। তাদের ভাষ্য, তারা প্রতিবছরই এই সময়টা নদের মধ্যে ধানের আবাদ করে আসছেন।

নদীগবেষক বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ছোট ছোট নদীর উৎসমুখগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে পানিপ্রবাহ নেই। সেই সঙ্গে নদীর পরিচর্যাও নেই। বিজ্ঞানসম্মত খনন হয় না। তবে নদী সুরক্ষায় সরকারের সুনজর দেয়া দরকার। তা না হলে পলি পড়তে পড়তে নদী ভরাট হয়ে যাবে। নদীর বুক চিড়ে চলবে চাষাবাদ। একসময় পরিবেশ বিপন্ন হয়ে উঠবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, মানাস নদ ভরাট হয়ে পড়েছে বলেই এলাকার মানুষজন শুষ্ক মৌসুমে ধানের চাষাবাদ করে আসছেন। এই নদের খননপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কাউনিয়া উপজেলার ভাটি অঞ্চলে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা ইতোমধ্যে খনন করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে খননের প্রস্তাবনা রয়েছে। নদী খনন করা হলে হয়তো ধানের চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে।

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়