Apan Desh | আপন দেশ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

সুজানগরে উত্তাপ ছড়াচ্ছে দুই প্রার্থীর দ্বন্দ্ব

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:২৭, ২১ এপ্রিল ২০২৪

সুজানগরে উত্তাপ ছড়াচ্ছে দুই প্রার্থীর দ্বন্দ্ব

আপন দেশ। ফাইল ছবি

এমপি সমর্থক ও বিরোধী বলয়ের দ্বন্দ্ব উত্তাপ ছড়াচ্ছে পাবনার উপজেলা নির্বাচনে। সুজানগর উপজেলায় (পাবনা-২) সংসদ নির্বাচন ঘিরে দ্বন্দ্বের রেশ প্রকাশ্যে। এমপির প্রভাব এড়িয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় বিরোধী বলয়ের প্রার্থীরা। তবে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে এমপিকে বিতর্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ এমপি সমর্থকদের।

পাবনার নয়টি উপজেলার মধ্যে প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হবে কেবল সুজানগর উপজেলা নির্বাচন। এখানে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাত্র দুজন। ফলে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন। এমপি বলয় বিরোধী আব্দুল ওহাব। 

নির্বাচনে এমপির প্রভাব খাটানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শাহিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ করে আব্দুল ওহাব বলেন, একটি উৎসবমুখর নির্বাচনের লক্ষ্যে দলীয় প্রতীকবিহীন নির্বাচন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনে কোনো প্রার্থীকে প্রভাবিত না করতে এমপি মন্ত্রীদের প্রতি নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী পাবনা-২ আসনের স্থানীয় এমপি এখনো পর্যন্ত কারো পক্ষ না নেয়নি। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী শাহিন এমপির প্রভাব কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, আমার সমর্থকদের ভয় দেখিয়ে তারা বলছেন ইভিএমে যেখানেই ভোট দাও জিতবে সে-ই (শাহিন)। এমপি তাদের সঙ্গে আছে এসব পাল্টে দেবে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় কালো টাকা ছড়াচ্ছে। আমি এমপি সাহেবকে অনুরোধ করেছি প্রধানমন্ত্রী ও সুজানগরবাসীর চাওয়া একদম প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে আপনি নিরপেক্ষ থেকে সহযোগিতা করবেন। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন এ নির্বাচনে তিনি কোনো প্রভাব ফেলবেন না।

এদিকে আব্দুল ওহাবের এ অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন শাহিনুজ্জামান শাহিন। মিথ্যাকে আকড়ে ধরে তার রাজনৈতিক জীবন মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে যোগ্য মনে করে দল আহমেদ ফিরোজ কবিরকে নৌকা দিয়েছিলেন। দলীয় নির্দশনা মেনে আমি তারই নির্বাচন করেছি, তাকে বিজয়ী করতে কাজ করেছি। সেখানে উনি (আব্দুল ওহাব) প্রকাশ্যে দল ও তার নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। এজন্য মনের ভয়ে তিনি এসব মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। এমপি সাহেব শুধু আমার অভিভাবক নন, তিনি পাবনা-২ আসনের সবার অভিাভাবক।

আরও পড়ুন>> বিতর্কেরমুখে ভাঙ্গুড়া ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশনায় এমপি আহমেদ ফিরোজ কবির নিরপেক্ষ আছেন। সংসদ নির্বাচনে এমপি সাহেবকে উনি (আব্দুল ওহাব) কুলাঙ্গার, অথর্ব ও প্রতিবন্ধীসহ নানা কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন। নৌকাকে ডুবানোর অপচেষ্টা চালিয়েছেন। কয়েকটি হুন্ডা আর গুন্ডা দিয়ে তিনি নির্বাচন পরিচালনা করতে চান। ভোট ছিনিয়ে নিতে চান। কিন্তু ইভিএমের কারণে তা পারবেন না। এসব মিথ্যা অভিযোগ ও গুজব দিয়ে এবার পার পাওয়া যাবে না।

এ ব্যাপারে পাবনা-২ আসনের (সুজানগর ও আমিনপুর) এমপি আহমেদ ফিরোজ কবির বলেন, প্রার্থীদের তো দূরে থাক কোনো ভোটারকেও আমি কোনোভাবে প্রভাবিত করছি না। দলের কর্মীরাও যার যাকে ভালো মনে হয় তার সঙ্গে কাজ করবে। কারও প্রতি কোনো চাপ নেই।  আমি প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলবো এ ধরণের ভিত্তিহীন অভিযোগ বা রেশারেশি রেখে জনসংযোগ করুন। মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চান। এতে লাভ হবে। কাদা ছোঁড়াছুড়ি করে কোনো কিছু অর্জন সম্ভব নয়।

প্রসঙ্গত, সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে মোট ভোটার দুই লাখের বেশি। বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহিন। এর আগে, ২০০৯-১৪ মেয়াদে চেয়ারম্যান ছিলেন বর্তমান এমপি আহমেদ ফিরোজ কবির। এরপর ২০১৪ সালে শাহিনের বাবা সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি আবুল কাশেম নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালের শেষের দিকে তিনি মারা যান। 

উপ-নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল কাদের রোকন। সবশেষ ২০১৯ সালে দলীয় মনোনয়নে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হয়ে উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব নেন শাহিনুজ্জামান শাহিন।

আপন দেশ/আরএন/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়