Apan Desh | আপন দেশ

এনামূল হকের শস্যচিত্র

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১০:৪২, ১৩ মার্চ ২০২৪

এনামূল হকের শস্যচিত্র

ছবি : সংগৃহীত

বিস্ত্রীর্ণ সবুজ ধানখেত। মাঝখানে হঠাৎ বেগুনি রঙের ফসলে চোখ আটকে যায়। সেখানে দুই রঙের ধানগাছ দিয়ে ফুটিয়ে তোল হয়েছে হৃদয়ের চিহ্ন।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বেকাশাহরা গ্রামে এমন শস্যচিত্র করেছেন স্থানীয় কৃষক ও পান-সুপারি ব্যবসায়ী এনামূল হক (৪২)। তিনি এর নাম দিয়েছেন ‘ভালোবাসা’। এনামূল ওই গ্রামের আবদুল আউয়ালের ছেলে। স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে তার সংসার।

২০২২ সাল থেকে এনামূল নিয়মিত তার জমিতে শস্যচিত্র তৈরি করছেন। শুরুতে ধানগাছ দিয়ে ‘মা’ শব্দের শস্যচিত্র করেছিলেন। পরের বছর ২০২৩ সালে একই জমিতে গড়েন শস্যচিত্র ‘জাতীয় পতাকা’। এবার তিনি হৃদয়ের চিহ্নের আদলে গড়েছেন শস্যচিত্র ‘ভালোবাসা’।

এনামূলের এই শস্যচিত্র দেখতে দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন লোকজন আসছেন। বিশেষ করে বিকালে দর্শনার্থীর সংখ্যা থাকে সবচেয়ে বেশি। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দর্শনার্থীরা নিজেদের মুঠোফোনে শস্যচিত্রের ছবি তুলছেন। অনেকেই ভিডিও করছেন।

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিবরবাড়ি থেকে আসা দর্শনার্থী মো. আবদুল ওয়াহাব জানান, গত বছর এনামূলের করা শষ্যচিত্র ‘জাতীয় পতাকা’ দেখতে এসেছিলেন। এ বছরও এসেছেন।

আরও পড়ুন <> এরশাদের খামারে রোজায় ১০ টাকা লিটার দুধ মিলে

শ্রীপুরের বারতোপা থেকে আসা ইকবাল হোসেন বলেন, একজন শৌখিন মানুষের ধানগাছ দিয়ে বানানো এমন শিল্পকর্ম দেখতে ভালো লাগছে। একজন সাধারণ মানুষের এমন উদ্যোগের খুব প্রশংসা করলেন গাজীপুর সদরের ভবানীপুর এলাকার শফিকুল ইসলাম।

নিতান্তই শখ থেকে এমন শস্যচিত্র তৈরি করেন বলে জানালেন এনামূল হক। তিনি বলেন, ‘মানুষ আমার তৈরি শস্যচিত্র দেখতে আসে। এতে যে আনন্দ, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমি উৎসাহ পাই।’

কীভাবে এমন শস্যচিত্র করেছেন, তা জানতে চাইলে এনামূল জানান, এবারের শস্যচিত্র তৈরিতে তিনি ব্যবহার করেছেন বেগুনি ও বঙ্গবন্ধু জাতের দুই ধরনের ধানের বীজ। প্রথমে জমিতে দড়ি দিয়ে কাঠামো তৈরি করেন। এরপর সময় নিয়ে নিখুঁতভাবে সেখানে রোপণ করেন ধানের চারা।

এনামূল হক জানান, ২০২১ সালে তিনি নিজের আধা বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো বেগুনি রঙের ধান চাষ করেন। তখন এই রঙিন ধান দিয়ে ব্যতিক্রম কিছু করার ইচ্ছা জাগে। সেই ভাবনা থেকেই পরের বছর থেকে তিনি শস্যচিত্র করছেন। প্রতিবছর এটি করে যেতে চান তিনি।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বলেন, ‘কৃষক এনামূলের শস্যচিত্রের কথা শুনেছি। এমন উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়।’

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়