Apan Desh | আপন দেশ

সড়কে আরসিসি ঢালাইয়ের একদিনেই ফাটল!

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ২২:০৩, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সড়কে আরসিসি ঢালাইয়ের একদিনেই ফাটল!

ছবি: আপন দেশ

টাঙ্গাইলের বাসাইলে সড়কে আরসিসি ঢালাই হয়েছে। এর একদিনেই বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে ঢালাই কাজে ব্যবহৃত উপাদানে অনিয়মের অভিযোগ তুলছেন স্থানীয়রা। উপজেলার কাশিল বটতলা-বাথুলীসাদী বাজার সড়কের কাজটি প্রায় শেষ। গুরুত্বপূর্ণ সড়কের কাজ নিয়ে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে পথচারী ও এলাকাবাসীর মধ্যে।

জানা যায়, এলজিইডি’র অধীনে প্রায় ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি পাকাকরণের কাজ করছে প্রগতি এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বাথুলীসাদী বাজার থেকে ২১০ মিটার সড়ক আরসিসি ঢালাইয়ের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই হয়। কিন্তু পরদিন সকালেই সড়কটির বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দেয়। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঢালাইকাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থানীয় সরকার অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়াও ওই অধিদফতরের প্রকৌশলী আব্দুল জলিলকেও কাজটি তদারকি করতে দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে পথচারী ও এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

এদিকে, ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে সংশ্লিষ্টরা তাড়াহুড়ো করে গ্যারাটিন দিয়ে ফাটল বন্ধের চেষ্টা করেন। পরে সড়কে যাতে ফাঁটল দেখা না যায় সেজন্য কচুরিপানা ও পাটের বস্তা দিয়ে সড়ক ঢেকে দেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন কাজ না করার কারণে বেহাল দশা হয়েছিল। এরপর সড়কে আরসিসি ঢালাই ও সংস্কারের কাজ আসে। গত সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সড়কে আরসিসি ঢালাই হয়। ওইদিন মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ চলে। পরদিন সকালেই ঢালাইয়ের বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় ফাটল দেখা দেয়। ঢালাই কাজে ব্যবহৃত উপাদান নিম্নমানের হওয়ায় একদিনেই ফাঁটল দেখা দিয়েছে। সড়কে গাড়ি চলাচল শুরু হলে ফের আগের অবস্থায় ফিরে যাবে, বেহাল দশা হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’

কাশিল ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় স্থানীয়রা খুবই ক্ষুব্ধ। এলজিইডি’র কর্মকর্তারা টাকা খেয়ে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। এখন তারা তড়িঘড়ি করে গ্যারাটিন ঢেলে ফাঁটল বন্ধ করার চেষ্টা করছে। যাতে ফাঁটল দেখা না যায়। এজন্য কচুরিপানা, পাটের বস্তা দিয়ে ঢেকে রেখেছে।’

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রগতি এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মো. মজনু মিয়া বলেন, ‘আমরা শাহ্ সিমেন্ট কোম্পানির কাছ থেকে রেডিমিক্স দিয়ে ঢালাই করেছি। ঢালাইয়ের চার ঘণ্টার মধ্যে পানি দিতে হয়। এটা টেকনিক্যাল কোনো সমস্যা না। হালকা ফাটল দেখা দিয়েছে। পরে কোম্পানির লোকজন ফাঁটলে গ্যারাটিন দিয়েছে। আপনি (সাংবাদিক) উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’  

বাসাইল উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল জলিল শাহ্ সিমেন্ট কোম্পানির ওপর দায় দিয়ে বলেন, ‘এটা রেডিমিক্স দিয়ে ঢালাই করা হয়েছে। ঢালাইয়ের পরে শুকানো শুরু হলে কিছুটা চুলফাঁড়া দিতে পারে। পরে কিউরিং হলে ঠিক হয়ে যায়। যে কোম্পানির কাছ থেকে আমরা ঢালাই করেছি, এটা তাদের দায়িত্ব।’ 

সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগটি তিনি অস্বীকার করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। পরে প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ওইখানে যে ঢালাই দেয়া হয়েছে, সব গাড়ির জন্য লোড নিতে পারবে। ওইখানে এমন একটা মেডিসিন ব্যবহার করা হয়েছে, যার কারণে প্রথমদিকে একটু ফাটল থাকবে। পরবর্তীতে এগুলো ঠিক হয়ে যাবে।’ বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রয়েছে বলেও এই কর্মকর্তা জানান।

আপন দেশ/বিসি/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়