Apan Desh | আপন দেশ

শৈত্যপ্রবাহে ফসল রক্ষায় বিডাব্লিউওটির পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ১৮ জানুয়ারি ২০২৪

শৈত্যপ্রবাহে ফসল রক্ষায় বিডাব্লিউওটির পরামর্শ

ছবি: সংগৃহীত

দেশের পাঁচ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আগামী কয়েকদিনে শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশা দেখা দিতে পারে। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশের বিভিন্ন গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃহস্পতিবারও কয়েক জেলায় বৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় জমিতে থাকা ফসল নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। বৈরি আবহাওয়ায় ফসল রক্ষার্থে কৃষকদের বিশেষ সতর্কবার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ ওয়েদার অবর্জাভার টিম (বিডাব্লিউওটি)।

মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, বৃষ্টি। সাথে ঘন কুয়াশা। এমন আবহাওয়া যেকোনো ফসলের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বিশেষ করে আলু, গম, ভুট্টা ও সরিষা। 

আলু 
এই আবহাওয়া আলুর সবচেয়ে বড় রোগ লেট ব্লাইট বা নাবি ধ্বসা বা মড়ক রোগের জন্য উত্তম। একবার এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে আর দমন করা অত্যন্ত কষ্টকর। তাই করণীয় হচ্ছে- আলু গাছ ভালো থাকতে থাকতে “মেনকোজেব বা মেনকোজেব + মেটালক্সিল” গ্রুপের ছত্রাকনাশক স্প্রে করেন। এখন কোনোভাবে আলু গাছে সেচ দিবেন না।

বৃষ্টির আগে ও পরে এই ছত্রাকনাশক এক সপ্তাহ পরপর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। গাছের গোড়ায় যেন কোনোভাবে পানি না জমে সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।

গম 
অনেক জমিতেই গমের শীষ চলে এসেছে। এই সময় বৃষ্টি হলে ব্লাস্ট, গোড়া পঁচা রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই গমের জমিতে যেন কোনোভাবে পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি কোন জমিতে ব্লাষ্ট রোগ দেখা দেয়, তাহলে “নাটিভো ৭৫ ডব্লিউ জি/নভিটা ৭৫ ডব্লিউজি” প্রতি লিটার পানিতে ০.৬ গ্রাম হারে মেশাতে হবে। এরপর গমের শীষ বের হওয়ার সময় একবার এবং তার ১২-১৫ দিন পর আরেকবার স্প্রে করলে পাতা ঝলসানো, বীজের কালো দাগ এবং মরিচা রোগ দমন করা যাবে।

পাশাপাশি গোড়াপঁচা রোগ দমনে “কার্বেন্ডাজিম (অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি)” প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় মাটিতে স্প্রে করুন। এটা গোড়া পঁচা রোগের জন্য।

ভুট্টা
ভুট্টা জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকলে গাছ লাল হয়ে গোড়া পঁচে মারা যায়। তাই ভুট্টার জন্য প্রয়োজনীয় পানি রেখে অতিরিক্ত পানি নালার মাধ্যমে বাইরে বের করে দিতে হবে। আর গোড়া পঁচা রোগ হলে অবশ্যই ছত্রাকনাশক কার্বেন্ডাজিম গ্রুপ অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করবেন। 

সরিষা 
সরিষার সবচেয়ে বড় রোগ অল্টারনারিয়া ব্লাইট। আর্দ্র আবহাওয়া ও মাঝারি তাপমাত্রায় ছত্রাক প্রচুর পরিমাণে স্পোর উৎপন্ন করে। এ স্পোর বায়ু ও পোকা দ্বারা বিস্তার লাভ করে। জানুয়ারির প্রথম ভাগ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগ পর্যন্ত সময়ে অল্টারনারিয়া ব্লাইটের আক্রমণ খুব বেশি হয়ে থাকে। 

এক মাস বয়স্ক চারা গাছের গোড়ার পাতায় বাদামি দাগে এ রোগের প্রাথমিক আবির্ভাব ঘটে। বলয় আকৃতির দাগ লক্ষণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। দাগগুলো গাঢ় বাদামি বর্ণ থেকে লাল রং ধারণ করে। আক্রান্ত পাতা হলদে হয়ে যায়। পরবর্তীতে শুকিয়ে ঝরে পড়ে। কাণ্ড ও শাখা-প্রশাখাতে লম্বাটে কালো দাগ পড়ে। 

আক্রমণ দেখামাত্র ম্যানকোজেব অথবা ম্যানকোজেব + মেটালক্সিল জাতীয় বালাইনাশক (ডায়াথেন এম ৪৫/রোভরাল ২০ গ্রাম) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পরপর ২/৩ বার স্প্রে করতে হবে।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ