Apan Desh | আপন দেশ

চা শ্রমিকদের ফের আন্দোলন

সিলেট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:১৭, ১৪ জানুয়ারি ২০২৪

চা শ্রমিকদের ফের আন্দোলন

ছবি: সংগৃহীত

দুই সপ্তাহ ধরে বেতন না পাওয়া, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত বকেয়ার তৃতীয় কিস্তি না পাওয়াসহ সাত দাবিতে কর্মবিরতি করেছেন চা শ্রমিকেরা। রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে ২টা পর্যন্ত সিলেটের তারাপুর চা বাগানে বিক্ষোভ করেন। 

তারাপুর চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদী। তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে বার বার বেতন আটকে যাচ্ছে। এতে করে শ্রমিক পরিবারে নানান সংকট বাড়ছে। বেতন না পাওয়ার কারণে আমাদের সংক্রান্তি উৎসব পানসে হয়ে গেছে; আমরা অচলাবস্থার অবসান চাই।’

“বার বার বাগান বন্ধ থাকাটা আমরাও চাই না, বাধ্য হয়ে অভাবের তাড়নায় আন্দোলন করছি।”

পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি চৈতন্য মোদী জানান, “দুই সপ্তাহ ধরে বাগান শ্রমিকরা বেতন পাচ্ছেন না। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বকেয়া বেতনের তৃতীয় কিস্তিও আমরা পাচ্ছি না। অধিকার হারিয়ে, অধিকার পাবার দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি।”

দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন না হলে মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতির পাশাপাশি অবস্থান; বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদী জানান, তাদের বাকি পাঁচ দফা দাবি হল- ঘরবাড়ি মেরামত, বাগানে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, নিয়মিত চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু, প্রতিমাসে কাটা অবসর ভাতা শ্রমিক ইউনিয়নে জমা করা এবং বাগানের যেসব শ্রমিক মারা গেছেন ও অবসরগ্রহণ করেছেন তাদের ৯০ দিনের মধ্যে ভাতা প্রদান করতে হবে।

তারাপুর চা বাগানের নারী শ্রমিক মমতা রায় বলেন, “চা বাগানই আমাদের জীবন। আমরা চা বাগান বন্ধ থাকুক এটা চাই না। দুই সপ্তাহ ধরে কোনো বেতন ভাতা পাচ্ছি না। ঘরে ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে পেটের তাগিদে আন্দোলন শুরু করেছি।”

শ্রমিক গীতা হালদার বলেন, “জানুয়ারি মাসে কোনো বেতন ভাতা নাই। সন্তানদের স্কুলে ভর্তি যেমন করতে পারিনি, তেমনি নতুন ক্লাসের বইও কিনে দিতে পারছি না। আমরা আমাদের ন্যায্য পাওনাটা চাই।”

দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে ২০২২ এর অক্টোবরে আন্দোলন শুরু করে দেশের চা বাগানগুলোর প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক। সে সময় প্রায় তিন সপ্তাহ তারা কাজ বন্ধ রাখেন।

পরে গত বছরের ২৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেন। সেই সাথে মজুরি নির্ধারণের পাশাপাশি বার্ষিক ছুটি, বেতনসহ উৎসব ছুটি, অসুস্থতা ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।

তবে শ্রমিকরা ২০২১ এর জানুয়ারি থেকে ২৭ আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত সময়ের জন্য বর্ধিত মজুরির বকেয়া দাবি করে আসছিলেন।

আরও পড়ুন>> রিজেন্টের সাহেদকে দেয়া খালাসের রায় স্থগিত

পরে শ্রম অধিদপ্তর থেকে এবিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, চা শ্রমিকরা বকেয়া মজুরি হিসেবে জনপ্রতি ১১ হাজার টাকা থোক বরাদ্দ পাবেন। সে অর্থ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তিন কিস্তিতে পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এসব বিষয়ে তারাপুর চা বাগানের ম্যানেজার রিংকু চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, “শ্রমিকদের দুই সপ্তাহের বেতন পাওনা এটা ঠিক, এজন্য তারা কর্মবিরতি পালন করছেন।”

এই বিষয়ে রোববার সন্ধ্যার পর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আশা করছি সমস্যার সমাধান হবে।”

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়