Apan Desh | আপন দেশ

‘বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি’

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:০৮, ৯ জানুয়ারি ২০২৪

‘বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি’

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। নির্বাচনে সব দল অংশ না নেয়া ও ভোটের দিন অনিয়মের খবরে উদ্বেগ জানিয়েছে দুই দেশ।

সোমবার (৮ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে একমত যে, এই নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ না করায় আমরা হতাশ।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ করেছে যে আওয়ামী লীগ দল ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় লাভ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিরোধী দলের কয়েক হাজার সদস্য গ্রেফতার এবং নির্বাচনের দিন অনিয়মের খবরে আমরা উদ্বিগ্ন।

নির্বাচনের সময় এবং এর পরবর্তী মাসগুলোতে বাংলাদেশের সহিংসতার ঘটনায়ও নিন্দা জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণ এবং গণতন্ত্র, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য তাদের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। 

মিলার বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার ঘটনাগুলো বিশ্বাসযোগ্যভাবে তদন্ত করতে এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করতে উৎসাহিত করি। আমরা সকল রাজনৈতিক দলকে সহিংসতা না করার আহ্বান জানাই।

আরও পড়ুন <> সুষ্ঠু মানদণ্ডে বাংলাদেশে নির্বাচন হয়নি: যুক্তরাজ্য

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইন্দো–প্যাসিফিক) অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অভিন্ন লক্ষ্যে কাজ করা, বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষা ও নাগরিক সমাজের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখা এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

অন্যদিকে, এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) মুখপাত্র বলেছেন, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনের ফলাফল লক্ষ্য করেছে যুক্তরাজ্য। এই নির্বাচনের সময়ে বিশ্বাসযোগ্য ও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার মান ধারাবাহিকভাবে পূরণ হয়নি বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক নির্বাচন নির্ভর করে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার ওপর। মানবাধিকার, আইনের শাসন ও যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান। নির্বাচনের সময় এসব মানদণ্ড ধারাবাহিকভাবে মেনে চলা হয়নি। ভোটের আগে বিরোধী দলের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।

নির্বাচন সামনে রেখে এবং নির্বাচনের প্রচার চলাকালে সহিংসতা ও ভয়ভীতি দেখানোর কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজনীতিতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কোনো স্থান নেই। সব দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। সে কারণে বাংলাদেশের মানুষের ভোট দেয়ার যথেষ্ট বিকল্প ছিল না।

যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একটি টেকসই রাজনৈতিক সমঝোতা ও সক্রিয় নাগরিক সমাজের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন <> বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি: যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে আমরা সকল রাজনৈতিক দলকে তাদের মতপার্থক্য দূর করতে এবং একটি অভিন্ন পথ খুঁজে বের করতে উৎসাহিত করি। আমরা এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন অব্যাহত রাখব, বিবৃতিতে বলা হয়।

অন্যদিকে নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে এবং ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিগমে ওয়াংচুক।

এ ছাড়া সোমবার (৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চীনা নেতাদের পক্ষ থেকে উষ্ণ অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটস্কি, ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এবং পাকিস্তান, ভুটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কার দূতরা বঙ্গবন্ধুকন্যাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

রোববার (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া সারা দেশে নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়। নির্বাচন হয়েছে ২৯৯ আসনে। ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে প্রার্থী ছিলেন এক হাজার ৯৭১ জন। ভোট নেয়া হয়েছে ব্যালট পেপারে।

নির্বাচনে ২২২টি আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৬২টি আসন, এ ছাড়া অন্যান্য দল পেয়েছে তিনটি আসন।নির্বাচনের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দাবি করেন নির্বাচনে ৪০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে। 

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়