নিহত জেসি মাহমুদ
প্রেমিকের উপস্থিতে দুই প্রেমিকার মধ্যে মারামারি। প্রথম প্রেমিকা নিহত। মামলা হয়েছে। দ্বিতীয় প্রেমিকাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর প্রেমিক রয়েছেন পলাতক। ফিল্মি ষ্টাইলের নৃসংশ ঘটনাটি মুন্সীগঞ্জ সদরের। নিহতের নাম জেসি মাহমুদ। স্থানীয় এভিজেএম স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। এদিকে জেসি মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত প্রেমিকের নাম বিজয় রহমান। আর তার গার্লফ্রেন্ডের নাম আদিবা আক্তার।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, প্রেমের বিরোধ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে স্কুলছাত্রী জেসি খুন হয়েছেন।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় নিহতের বড় ভাই শাহরিয়ার জিদান বাদী হয়ে দুইজনকে আসামি ও অজ্ঞাতনামাসহ আরও ১-২ জন উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় মুন্সীগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য আরিফুর রহমানের ছেলে বিজয় রহমান (২২) ও পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য জাহিদ হাসানের মেয়ে আদিবা আক্তারকে (১৯) আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ আদিবাকে বুধবার গ্রেফতার করেছে।
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) সুমন দেব জানান, আদিবা ও জেসি উভয়ের সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল অভিযুক্ত বিজয়ের। সম্প্রতি বিজয় আদিবাকে বিয়ের পরিকল্পনা করছিল বলে জানতে পারে জেসি। এরপর জেসি রাগান্বিত হয়ে উঠে। বিজয়ের অপর প্রেমিকা আদিবাকে জেসি ও বিজয়ের মধ্যকার বেশকিছু ম্যাসেঞ্জার কথোপকথনের স্কিনশট পাঠায়।
পরে মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) তারা সিদ্ধান্ত নেয় বিজয়ের বাসায় এ নিয়ে ফয়সালা করার। পরে তারা তিনজন সন্ধ্যায় একসঙ্গে বিজয়ের বাসার পঞ্চম তলার ছাদে সন্ধ্যার দিকে মিলিত হয়। সেখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে আদিবা ও বিজয় উভয়ই জেসিকে শরীরের বিভিন্ন অংশে কিল-ঘুষি মেরে জখম করে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে বিজয় জেসির গলা চেপে ধরলে ঘটনাস্থলেই মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়ে। পরে বিজয় স্থানীয় আরও কয়েকজনের সহায়তায় জেসিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে এবং পরিকল্পিতভাবে ডাক্তারকে জানায় সে ছাদ থেকে পড়ে গেছে। এরমধ্যেই জেসি মারা যায়।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনার জড়িত অনান্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মধ্য কোর্টগাও এলাকার সৌদি আরব প্রবাসী সেলিম মাহমুদের মেয়ে আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন গভ. গার্লস হাই স্কুলের এসএসসি বর্ষের শিক্ষার্থী জেসি মাহমুদকে (১৭) মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনরা। তবে এসময় মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শৈবাল বসাক জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে অচেতন অবস্থায় মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার ভাই পরিচয় দেওয়া আরেক যুবক। এসময় মেয়েটি অচেতন অবস্থায় ছিলো। পরে তার অবস্থার অবনতি দেখা দিলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
আপন দেশ ডটকম/ সবুজ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।
