Apan Desh | আপন দেশ

সন্তানের খতনায় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:৩৯, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ১৪:৩৮, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সন্তানের খতনায় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন

ফাইল ছবি

দেশে অনেকেই হাজাম দিয়ে সন্তানদের খতনা করান। সন্তানের ব্যথা বা ভয় এড়াতে ডাক্তার দিয়েও খতনা করানো হয়। সাধারণত শিশুর নিরাপত্তার কথা ভেবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন অভিভাবকরা। খতনার আগে ও পরে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সেগুলো হলো-

খতনা করানোর কারণ
ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী মুসলিম ছেলে শিশুদের খতনা করানো হয়। আবার জন্মগতভাবে কিছু রোগের ক্ষেত্রেও খতনা করানো হয়। যেমন লিঙ্গের অগ্রভাগের ছিদ্র ছোট থাকলে, বারবার প্রস্রাবে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনায়। অনেকের চামড়া গ্লান্স লিঙ্গের পেছনে আটকা পড়ে ব্যথা হয়, তাদেরও খতনা করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

মেডিকেলের ভাষায় এ দুটি অবস্থাকে বলা হয় ফাইমোসিস ও প্যারাফাইমোসিস। এছাড়া কারোর জন্য আবার খতনা করা নিষেধ। অনেকেরই হিমোফিলিয়া নামক রক্তরোগ থাকে, তাদের খতনা করতে নিষেধ করা হয়। কেননা, এ রোগীর কাটাছেঁড়া করলে রক্তপাত সহজে বন্ধ হতে চায় না। এছাড়া অনেকের প্রস্রাবের নালির ছিদ্র ভিন্ন জায়গায় হয়ে থাকে। এ ধরনের রোগীদের নালি ঠিক করতে অস্ত্রোপচারের সময় লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়ায় পুনরায় নালি তৈরিতে প্রয়োজন হয়। এজন্য তাদের খতনা করাতে নিষেধ করা হয়।

কোন বয়সে সন্তানের খতনা করাবেন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিন্ন সময় বেছে নেয়া হয় খতনার জন্য। কোনো কোনো দেশে সন্তান জন্মের পরই খতনা করানো হয়। আর এ সময় সন্তান খুব-একটা ব্যথাবোধ করতে পারে না। এতে অল্প সময়ের মধ্যে ক্ষত শুকিয়ে যায়। তবে সন্তানের খতনার জন্য ৪-১২ বছর বয়স ভালো। এ সময় খতনা করলে শিশুর খুব বেশি সমস্যা হয় না।

আরও পড়ুন>> খতনা করাতে গিয়ে আইডিয়াল শিক্ষার্থীর মৃত্যু

বেশি ছোট শিশুদের খতনা না করানো ভালো। তারা ভয় পায় ও কান্নাকাটি করে। আবার বয়স বেশি হলে তাদের অস্ত্রোপচার-পরবর্তী ইরেকশনের জন্য রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আর সন্তানের খতনার আগে তাকে বাড়ি থেকে সবার সাহস দিতে হবে। কখনোই সন্তানকে না বলে, তার ইচ্ছার বিপরীতে খতনা করাতে যাবেন না। দেখা যাবে জোর করে খতনা করাতে গিয়ে সার্জারির সময় সন্তান আঘাত পেতে পারে, বা সমস্যা হতে পারে।

এছাড়া আধুনিক যুগে কিছু ডিভাইস রয়েছে। যা লেজারের মাধ্যমে খতনার সার্জারি করে থাকে। তবে ডিভাইস দিয়ে খতনা করানোর আগে জানতে হবে, ব্যবহারকারী চিকিৎসক এ ব্যাপারে কতটা প্রশিক্ষিত। আবার লোকাল অ্যানেসথেসিয়া বা জেনারেল অ্যানেসথেসিয়ার মাধ্যমেও অস্ত্রোপচার করা যেতে পারে। 

জেনারেল অ্যানেসথেসিয়ায় অস্ত্রোপচারে সন্তানকে ৬ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে। কিন্তু দেশে অবেদনবিদ ও এনআইসিইউ সুবিধা নেই বলে অনেক সময় সন্তানের মৃত্যু হয়। এজন্য খতনার আগে কোন ধরনের অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করা হবে এ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেয়া উচিত।

খতনার পর জটিলতা এড়াতে করণীয়
অস্ত্রোপচারে রক্তপাতজনিত সমস্যা বেশি হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, সন্তানকে বাড়ি আনার পর পুনরায় রক্তপাত শুরু হয়। রক্তপাত বেশি হলে কাপড় দিয়ে প্রথমে চেপে ধরে রাখতে হয়। এরপরও যদি রক্তপাত না কমে তাহলে চিকিৎসকের কাছে যান।

খতনার পর লিঙ্গে ইনফেকশন কিংবা অগ্রভাবে ক্ষত হয় কিনা, সেটি খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য সঠিক ড্রেসিং ও ওষুধ খেতে হবে। এতে ঠিক হয়ে যায়। সন্তানের যদি লোকাল অ্যানেসথেসিয়ায় অস্ত্রোপচার হয়, তাহলে কখনো কখনো লিঙ্গের গোড়া তিন-চারদিন ফোলা থাকার সম্ভাবনা থাকে। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

আপন দেশ/এসএমএ

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়