Apan Desh | আপন দেশ

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি, সিসিইউতে স্থানান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ১৫ অক্টোবর ২০২৩

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি, সিসিইউতে স্থানান্তর

ফাইল ছবি

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতির পর তাকে কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেয়া হয়েছে।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নেয়া হয়।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।

খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতির পর তাকে সিসিইউতে নেয়া হয়। নতুন করে ইসিজি, এক্স-রেসহ কয়েকটি টেস্ট করা হয়েছে। প্যারামিটারগুলো ওঠানামা করছে। বোর্ড তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনো উদ্বিগ্ন। কারণ তিনি শঙ্কামুক্ত নন। যে কোনো সময় পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন শারীরিক দুর্বলতা থাকায় অনেক ওষুধ খেতে চান না। আর তাকে সবসময় স্যালাইন ও ইনজেকশনের ওপর থাকতে হচ্ছে। দুই দিন আগে রক্তের হিমোগ্লোবিনের কিছুটা উন্নতি হলেও ফের কিছুটা কমেছে। ইনসুলিন দিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। নানা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে লিভারের সমস্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। তবে লিভার প্রতিস্থাপন ছাড়া স্থায়ী কোনো সমাধান নেই। স্বাস্থ্যের বিভিন্ন রিপোর্ট দেখে বোর্ড বৈঠক করে চিকিৎসায় পরিবর্তন আনে প্রতিনিয়ত। কিছু রিপোর্ট একাধিক হাসপাতালে টেস্ট করা হচ্ছে। বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। লিভারের পাশাপাশি তার কিডনি জটিলতা ও ডায়াবেটিসের মাত্রাও বাড়ছে। কিডনির ক্রিয়েটিনিন মাঝেমধ্যে বর্ডার লাইনের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে। ফলে একটিকে কমাতে গেলে আরেকটিতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে তার লিভার প্রতিস্থাপনে জোর দিচ্ছে, যা বাংলাদেশে সম্ভব নয়।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসক অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী বলেন, বেগম জিয়া মূল চিকিৎসা পাচ্ছেন না। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে তার। আমরা যে চিকিৎসা দিচ্ছি তা তাৎক্ষণিক। জরুরি ভিত্তিতে তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। না হলে যে কোনো সময় তিনি মারা যেতে পারেন। লিভারের সংক্রমণের কারণে বারবার পেটে পানি চলে আসছে বেগম জিয়ার। উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হলেও কাজ হচ্ছে না। পেট থেকে পানি হৃদযন্ত্র পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। এ জন্য ইতোমধ্যে তাকে চার বার সিসিইউতে নেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়ার শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হওয়ায় এ পর্যন্ত চার ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। আমাদের হাতে আর কিছু নেই, যা কিছু করার ছিল করেছি। উন্নত চিকিৎসাই একমাত্র ভরসা। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া কিডনি, ফুসফুস, হৃদরোগ, লিভার জটিলতায় ভুগছেন। দুই মাসের বেশি সময় ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খালেদা জিয়া।

এর আগেও বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাকে। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার অ্যানজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।

গত ৯ আগস্ট স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়