Apan Desh | আপন দেশ

তিস্তায় পানি আবারো বিপৎসীমার উপরে

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১০:৩১, ২৬ আগস্ট ২০২৩

তিস্তায় পানি আবারো বিপৎসীমার উপরে

ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানীর শঙ্কায় কৃষকরা।

শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি।

এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড বিপৎসীমার দশমিক ১৩ সেন্টিমিটারিউপরে।

স্থানীয়রা জানান, কয়কদিনের গরমের পর টানা বৃষ্টি শুরু হয়। এতে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বেড়ে যায়। সেটি বেড়ে হাতীবান্ধার কয়কটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এদিকে জেলার পাঁচটি উপজেলার ভোটমারী, তুষভান্ডারের আমিনগঞ্জ, কাকিনা, পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকের ফসলের খেত বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানীর শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি হওয়ার ফলে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলো শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।

তিস্তাপাড়ের আয়নাল হক বলেন, ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় ঘর থেকে বের হতে পারছি না। গরু-ছাগল নিয়ে খুব কষ্টে আছি। হাতীবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী আলিয়া বেগম বলেন, তিস্তার পানি বাড়ায় রান্না বন্ধ।

গড্ডিমারী ইউনিয়নের নিজ গড্ডিমারী গ্রামের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, শুক্রবার থেকে তিস্তার পানি বেড়ে পাঁচটি ওয়ার্ডে প্রবেশ করেছে। চরাঞ্চলের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। ঘরবাড়িতে পানি ঢোকায় অনেকেই বের হতে পারছেন না।

আরও পড়ুন <> ঢাকায় ৯ দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

হাতীবান্ধার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, তিস্তা নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি পরিবারগুলো ভোগান্তিতে পড়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আলম বলেন, হঠাৎ করে তিস্তার পানি বৃদ্ধির খবর পাওয়া গেছে। তাই তীরবর্তী মানুষদের খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। তাদের তালিকা করে ত্রাণ দেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী (পাউবো) আসফাউদ্দৌলা বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের পানিবন্দী পরিবারদের তালিকা করে দেয়া হয়েছে। তালিকা হয়ে গেলে শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছে।

এর আগে জুলাইয়ে তিস্তার পানি বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। পানি নামার পর ভাঙন দেখা দেয়।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়