Apan Desh | আপন দেশ

রেখা হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিল ঘাতক দুলাভাই

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

রেখা হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিল ঘাতক দুলাভাই

ফাইল ছবি

কুষ্টিয়ায় কলেজছাত্রী রেখা খাতুনকে (১৮) অপহরণ করে হত্যা করেছেন তারই দুলাভাই আওলাদ হোসেন (৪৫)। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন একটি ব্যাংকের গাড়িচালক আওলাদ হোসেন।

কুষ্টিয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বলেন, শনিবার বিকেলে কলেজছাত্রী রেখা খাতুনকে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া মডেল থানায় তার বাবা আব্দুর রহিম ব্যাপারী বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার প্রেক্ষিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। আসামি আওলাদ হোসেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ মোস্তাফিজুর রহমানের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।

স্বীকারোক্তিতে আওলাদ হোসেন জানান, বুধবার (৬ ডিসেম্বর) আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে ফোন করে রেখাকে ডেকে নেয়া হয়। পরে বিয়ে উপলক্ষে কেনাকাটার কথা বলে তাকে কুমারখালী মহিলা কলেজ থেকে নিজের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসে তুলে নেন। কুষ্টিয়া হাইস্কুল চত্বরে একটি ব্যাংকের ভাড়া করা গাড়িসহ রেখাকে গ্যাড়েজে নিয়ে আসেন আওলাদ। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর নিজের শ্যালিকাকে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেন দুলাভাই। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মাইক্রোতে করে রেখার মরদেহ গ্যারেজ নিয়ে যান। মরদেহটি মন্ডল ফিলিংস্টেশনের নিকটস্থ একটি ভাগাড়ে ফেলে দেয়া হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে রেখার ব্যবহৃত ভ্যানিটি ব্যাগটি কুষ্টিয়া-ঝিনাইদাহ সড়কে মজমপুর এলাকায় ফেলে দেয়া হয়। 

আওলাদ হোসেনের কর্মরত ব্যাংকটির কুষ্টিয়া জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জানান, বুধবার বেলা ১২টার সময় আওলাদ হোসেন গাড়ি সার্ভিসিংয়ের কথা বলে অফিস থেকে বেরিয়ে যান। এরপর দুপুর ২টার দিকে অফিসে এসে গাড়ি সার্ভিসিংয়ের বিল জমা দেন। সন্ধ্যা হতে মাগরিরেব আজানের পূর্ব পর্যন্ত আওলাদ হোসেন কোথায় ছিলেন- সে বিষয়ে আমার কাছে সঠিক কোনো তথ্য নেই। সন্ধ্যায় অন্যান্য দিনের মতো অফিস শেষ করে  তিনি বেরিয়ে যান।

আরও পড়ুন<<>> বিয়ের ১৯দিন পর মরদেহ উদ্ধার, সন্দেহে দুলাভাই

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, দশম শ্রেণিতে পড়াকালীন থেকেই আওলাদ রেখাকে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন। বিষয়টি সুরাহার জন্য পারিবারিকভাবে একাধিকবার কথাও হয়েছে। কিন্তু তাতেও সমাধান হয়নি। আওলাদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে রেখাকে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়। রেখার এই বিয়েকে কোনোভাবেই মানতে পারেননি আওলাদ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রেখাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক আলমগীর হোসেন বলেন, কলেজছাত্রী রেখা খাতুন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাইক্রোসহ আনুষঙ্গিক আলামত জব্দ করা হয়েছে। তবে রেখা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ছাড়াও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে কিনা- সে বিষয়ে ডাক্তারি রিপোর্ট হাতে পেলে বলতে পারব। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা- সে বিষয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

এর আগে বুধবার কুষ্টিয়ার হাউজিং এলাকার ভাগার থেকে কলেজছাত্রী রেখা খাতুনের কম্বলে মোড়ানো মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহতের বড় দুলাভাই আওলাদ হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়