Apan Desh | আপন দেশ

শীতের তীব্রতা বেড়েছে বৃষ্টিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:০২, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪

শীতের তীব্রতা বেড়েছে বৃষ্টিতে

ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘদিন পর মাঘের শুরুতে এসে বৃষ্টির দেখা পেল রাজধানীবাসী। বুধবার  (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ঢাকাসহ চার বিভাগের ১৪ জেলায় বৃষ্টির পর তীব্র শীতের দাপট বেড়েছে। তবে বৃষ্টি হলেও এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তারপরও দেশের ২১টি জেলায় বয়ে গেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।

হঠাৎ  বৃষ্টির কারণে রাজধানীতে অফিসফেরত মানুষ যেমন ভোগান্তিতে পড়েন, তেমনি ফুটপাতের দোকানিরাও কবলিত হন। 

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শীতার্ত বাতাস আর কুয়াশার ভারী আবরণের কারণে ঠাণ্ডা জেঁকে বসেছে। কুয়াশার ভারী স্তর ভেদ করে সূর্যের কিরণ মিলছে না। রোদের উত্তাপ-স্বল্পতার কারণে দিনের বেলাতেও শীতের অনুভূতির তীব্রতায় কষ্ট বাড়ছে।

অন্যদিকে আকাশে নিচুস্তরে মেঘের কারণে আটকে যাচ্ছে দৃষ্টিসীমা। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় শীত বেশি কামড় দিচ্ছে। বিমান থেকে শুরু করে নৌযান ও সড়কের যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। দেশের হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, বৃষ্টির কারণে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) থেকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। আগামীকাল শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) থেকে ঠাণ্ডার প্রকোপ আরও বাড়বে। আজও বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। জানুয়ারি মাসে কনকনে শীত কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে শীত ।

এদিকে ভারী কুয়াশায় বুধবার বঙ্গবন্ধু সেতুতে ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামতে পারেনি পাঁচটি যাত্রীবাহী বিমান। এগুলো পরে চট্টগ্রাম ও কলকাতায় অবতরণ করে। এ ছাড়া একই সময়ে আরও ১৫-২০টি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট গন্তব্যে যেতে পারিনি। পরে অবশ্য বেলা বেড়ে যাওয়ার পর থেকে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

আরও পড়ুন <> জানুয়ারিতে থাকবে শীতের তীব্রতা

ভারী কুয়াশায় ছাওয়া সড়কে দৃষ্টিসীমা সীমিত হওয়ায় মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) মধ্যরাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১০ থেকে ১৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। ঘন কুয়াশায় মঙ্গলবার রাত ৩টার পর থেকে মহাসড়কের এলেঙ্গা অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘন কুয়াশার কারণে সেতুর ওপর পরপর চারটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েক জন গুরুতর আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে ঘন কুয়াশায় বুধবার মাঝপদ্মায় আটটি ফেরি আটকা পড়ে। পরে দুর্ঘটনা এড়াতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, আরিচা-কাজিরহাট ও ধাওয়াপাড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটে বন্ধ করে দেয়া হয় ফেরি চলাচল। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ওিই তিন নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখেন কর্তৃপক্ষ। 

বুধবার তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন আট দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, ঢাকায় ছিল ১২ দশমিক চার ডিগ্রি। আর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৭ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা আগামী দুই দিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এরপর থেকে আবার তাপমাত্রা কমতে পারে। সে অনুযায়ী জানুয়ারিজুড়েই শীতের প্রকোপ থাকতে পারে। দক্ষিণাঞ্চলের আকাশে মেঘ আছে। উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় কুয়াশার দাপট কমেনি।

আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বলেন, কিশোরগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় তা প্রশমিত হলেও শীত থাকবে এ মাসজুড়েই।

এবারে শীত বেড়েছে জানুয়ারিতে এসে। গত ১১ জানুয়ারি দেশের উত্তরের কিছু জেলায় শুরু হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, সঙ্গে ছিল ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিম হাওয়ার দাপট। ২০ জানুয়ারির পর শৈত্যপ্রবাহের বিস্তার ঘটতে থাকে। তীব্র ঠাণ্ডা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশ। 

তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যাওয়ায় বিভিন্ন জেলায় বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাসের সময় পিছিয়ে নেয়া হয়েছে সকাল ১০টায়।

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়