Apan Desh | আপন দেশ

গুমের শঙ্কা আছে, উপরে আল্লাহ নিচে গার্জিয়ানরা বুঝবেন: জাহাঙ্গীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:২২, ২৭ এপ্রিল ২০২৩

গুমের শঙ্কা আছে, উপরে আল্লাহ নিচে গার্জিয়ানরা বুঝবেন: জাহাঙ্গীর

ফাইল ছবি

ক্ষমা চেয়ে দলীয় সদস্যপদ পেয়ে ফের বেকে বসেছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ‘স্বতন্ত্র’ হিসাবে লড়াই করতে মনোনয়ন দাখিল করেছেন।

তার মনোনয়ন কোনো কারণে বাতিল হতে পারে এমন শঙ্কা থেকে মা জায়েদা খাতুনকে প্রার্থী হিসাবে রাখার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু এতেও শেষ নয়। গুম, গ্রেফতার এমনকি মৃত্যুর দুঃস্বপ্নও দেখতে শুরু করেছেন সাবেক এই মেয়র। ‘স্বতন্ত্র’ হিসেবে নিজের ও মায়ের নামে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে তিনি ‘গুমের’ শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, তাকে গ্রেফতারও করা হতে পারে, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

আগামী ২৫ মে ভোট সামনে রেখে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন বৃহস্পতিবার আজমত, জাহাঙ্গীর ও তার মা জায়েদা খাতুনসহ ১২ জন তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আগামী রোববার এসব মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই হবে। ৮ মে পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।

এদিকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে আজমত উল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ‘আস্থা থাকলে’ জাহাঙ্গীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন বলেই তার বিশ্বাস। আর সেজন্য তিনি ৮ মে পর্যন্ত দেখার কথাও বলেছেন।

তবে ভোটের মাঠ থেকে সহজে ছাড়ছেন না, এ কথা জানিয়ে রাখলেন জাহাঙ্গীর। বলেছেন, ‘ষড়যন্ত্র করে’ না সরালে তিনি সরবেন না। বলেন, আমার স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ার কোনো পথ নাই, যদি আমাকে সরিয়ে দেওয়া না হয়। উপরে আল্লাহ আছে, নিচে গার্জিয়ানরা আছেন তারা বুঝবেন। 

ঘরোয়া আলোচনায় বঙ্গবন্ধু ও একাত্তরে শহীদদের নিয়ে ‘আপত্তিকর মন্তব্য’ করার অভিযোগ ওঠার পর দল ও সিটি করপোরেশনের পদ হারানোর দেড় বছর পর গত ১ জানুয়ারি জাহাঙ্গীর ‘ক্ষমা’ পান। কিন্তু চার মাস না যেতেই রাজধানী লাগোয়া মহানগরটিতে ২০১৩ সালের নির্বাচনের আমেজ ফিরে এসেছে জাহাঙ্গীরের সিদ্ধান্তে।

মেয়র পদ থেকে বরখাস্তের আদেশ নিয়ে তিনি বলেন, আমি ১৮ মাস মিথ্যার (বহিষ্কারাদেশ) দায় বহন করছি। এটা থেকে আমি মুক্তি পেতে চাই। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমি নির্বাচন করব। পাঁচ বছরের একটা নির্বাচিত মেয়রকে তিন বছর পর মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগে একটা চিঠি দিয়ে এ রকম করেছে। হয়ত কালকের পরে আমার পায়ে শিকল পড়তে পারে। আমাকে অ্যারেস্ট করতে পারে, আমাকে গুম করতে পারে। আমি দেশবাসী এবং নগরবাসীকে বলে যাই, যদি আমার মৃত্যু হয়, আপনারা বিশ্বাস করেন, আমার শহর রক্ষা করতে গিয়ে যা যা ভালো কাজ আছে আমি করেছি। ক্ষমতার কারণে অনেকে মিথ্যাচার করতে পারে, ‘ফাঁসিয়ে দিতে’ পারে মন্তব্য করে জাহাঙ্গীর বলেন, এই দেশে অন্যায়কারীরা যেভাবে নাটক সাজায়, আমার বিরুদ্ধে হয়ত বা সেভাবেও কিছু করতে পারে। আমি বলতে চাই, হয়তবা আমি আপনাদের সামনে জীবনে নাও আসতে পারি, আমি এই শহরের মানুষের কোনো ক্ষতি হয় এমন কিছু করি নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার এবং এই শহরের মানুষের ক্ষতি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নৌকার বিরুদ্ধে আমার অবস্থান নয়। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান নয়, ব্যক্তি আজমত উল্লা খানের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান নয়। আমার অবস্থান অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে, অসৎলোক, খারাপ লোকের বিরুদ্ধে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মেয়র পদে মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র জমা দেন জাহাঙ্গীর। পরে তার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য আসকর আলী, সাবেক সহ-দফতর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম এবং সাবেক গাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদির।

২০১৮ সালে জয়ের তিন বছর পর তার ওপর হওয়া ‘এই অন্যায়-অত্যাচারের’ প্রতিবাদেই মা প্রার্থী হয়েছেন দাবি করে জাহাঙ্গীর বলেন, আমি সন্তান হিসেবে আমার মাকে রক্ষা করার জন্য আমার জীবন এখানে প্রস্তুত রেখেছি। 

তার মা সব সময় শহরের মানুষের জন্য কাজ করেছেন দাবি করে তিনি বলেন, মা হিসেবে দেখেছেন এই সন্তানের ওপর কীভাবে অত্যাচার করা হয়েছে। সেজন্য আমার মাও ফরম নিয়েছেন। আমি আমার মার পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। সন্তান হিসেবে আমি আমার জীবন পর্যন্ত দিতে প্রস্তুত।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়