Apan Desh | আপন দেশ

সংগীতশিল্পী সাদী মহম্মদ আর নেই 

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ১৩ মার্চ ২০২৪

আপডেট: ২৩:১৯, ১৩ মার্চ ২০২৪

সংগীতশিল্পী সাদী মহম্মদ আর নেই 

ফাইল ছবি

রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদী মহম্মদ আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ বুধবার (১৩ মার্চ) রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যু সংবাদ পাওয়া যায়। তার মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন তার ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ। 

শিবলী গণমাধ্যমকে জানান, আজও তানপুরা নিয়ে তার বড় ভাই সংগীতচর্চা করেছেন। সন্ধ্যার পর হঠাৎ দেখেন ঘরের দরজা বন্ধ। তখন দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

গত বছরের ৮ জুলাই সাদীর মা জেবুন্নেছা সলিম উল্লাহ (৯৬) বার্ধক্যজনিত রোগে মারা যান। মা মারা যাওয়ার পর থেকেই ট্রমার মধ্যে ছিলেন সাদী মহম্মদ। ঠিক স্বাভাবিক ছিলেন না মানসিকভাবে। 

প্রাথমিকভাবে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সাদী মোহাম্মদ মারা গেছেন। তার মরদেহ বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল হাসপাতালে আছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন কিনা এখনো নিশ্চিত না। আমরা তার বাড়িতে এসেছি।

মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক তদন্ত তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বাসায় যে ঘরে বসে সাদী মহম্মদ গান করতেন, সেখানেই তার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া গেছে। মনে হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সন্ধ্যা ৭টার পর কোনো এক সময় ওই ঘটনা। বাসার লোকজন ডাকাডাকি করে তার সাড়া না পেয়ে দড়জা ভেঙে ভেতরে মরদেহ ঝুলতে দেখে। পরে খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

সাদী মহম্মদ রবীন্দ্রসংগীতের ওপরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

আরও পড়ুন <> কলকাতার সিনেমায় পরিমণি

২০০৭ সালে ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার ‘শ্রাবণ আকাশে’ ও ২০১২ সালে তার ‘সার্থক জনম আমার’ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।

২০১২ সালে তাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করে চ্যানেল আই। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি তাকে রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান করে।

সাদী মহম্মদ মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে শহীদ পিতার সন্তান। তার বাবার নাম শহীদ সলিম উল্লাহ। ১৯৭১ সালে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের সি-১২/১০ বাড়িটি ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা সলিম উল্লাহর বাড়িতে নিয়মিত বৈঠকে আসতেন দলের শীর্ষ নেতারা, আসতেন বঙ্গবন্ধুপুত্র শহীদ শেখ কামালও।

একাত্তরের ২৩ মার্চ তাজমহল রোডের সেই বাড়িতে সেজ ছেলে সাদী মহম্মদের আঁকা বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান বাবা সলিম উল্লাহ, সেই পতাকা সেলাই করে দিয়েছিলেন সাদী-শিবলীর মা জেবুন্নেছা সলিম উল্লাহ। 

সেই পতাকা ওড়ানোর সূত্র ধরে একাত্তরের ২৬ মার্চ অবাঙালি বিহারি ও পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে সলিম উল্লাহর বাড়ি। পুড়িয়ে দেয়া হয় পুরো বাড়ি, গুলি করে মারা হয় সলিম উল্লাহকে।

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়