Apan Desh | আপন দেশ

হাফেজ রেজাউলের খুনিদের সরকার আড়াল করছে: ইসলামী আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:২৬, ৫ আগস্ট ২০২৩

আপডেট: ২০:৪৯, ৫ আগস্ট ২০২৩

হাফেজ রেজাউলের খুনিদের সরকার আড়াল করছে: ইসলামী আন্দোলন

ছবি: আপন দেশ

ঢাকা: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, সরকারের জনসমর্থন তলানীতে পৌঁছেছে। মাইকিং করেও ভোোরদের কেন্দ্রে আনতে পারছে না। যা আসছে তাও আবার ১০ ভাগের কম।

তিনি বলেন, সরকারের পক্ষে এর চেয়ে বেশি জনসমর্থন নেই। আরও আছে চাঁদাবাজ, গুণ্ডা ও মাস্তান। এর মাধ্যমে সরকার পুনরায় ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে আছে। সরকার বিরোধী দলের কর্মসূচির দিন শান্তি সমাবেশের নামে সমাবেশ ডেকে অশান্তি সৃষ্টি করে।

এখন থেকে শান্তি সমাবেশের পরিবর্তে অশান্তি সমাবেশ নামকরনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এতে মানুষ ধোকা থেকে বাঁচতে পারবে। গত ২৮ জুলাই বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে অনুষ্ঠিত যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের শান্তি সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হাফেজ রেজাউল করিমকে নির্মমভাবে খুন করে শান্তি সমাবেশের আসল চরিত্র প্রকাশ করেছে।

তিনি অবিলম্বে রেজাউলের খুনিদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বলেন, সরকার আলেম-হাফেজ হত্যাকারীদের আড়াল করলে এই সরকার খুনি সরকার হিসেবে পরিগণিত হবে।  

শনিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে সরকারি দলের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত মাদরাসা শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউল করীম হত্যা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারি মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা নূরুল ইসলাম নাঈম, ডা. শহিদুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, মুফতী মাছউদুর রহমান, মুফতী আরমান হুসাইন, যুবনেতা হাফিজুল হক ফাইজ, ছাত্রনেতা ইউসুফ পিয়াস, হাবিবুল্লাহ মেসবাহ, আব্দুর রহমান। সমাবেশ পরিচালনা করেন মুফতী ফরিদুল ইসলাম, কেএম শরীয়াতুল্লাহ।

মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, এই সরকারের আমলে অনেক আলেম-হাফেজ খুন হয়েছে। অনেক আলেম এখনো কারানির্যাতিত অবস্থায় আছেন।

তিনি অবিলম্বে কারাবন্দি আলেমসহ বিরোধী নেতাদের মুক্তি দাবি করে বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে সাধারণ মানুষ অসহায় জীবন যাপন করছে। অনেক শ্রমিক মিল-কারখানা বন্ধে হাহাকার করছে। অনেক কৃষক কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম না পেয়ে কান্না করছে। জালিম ও ফ্যাসিবাদী সরকারের অধীনে নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন অংশ নেবে না এবং দেশের অধিকাংশ নিবন্ধিত দলও অংশ নেবে না। কাজেই সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বলছেন খেলা হবে। আমরাও বলছি খেলা হবে, তবে পুলিশ বাদ দিয়ে আসুন, খেলা হবে। ভারতের হরিয়ানায় উগ্রবাদী বিজেপির আক্রমণে মসজিদে আগুন, মসজিদের ইমামসহ বেশ কয়েকজন মুসলমান হত্যা করে ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজাধারী ভারত চরম উগ্রতার পরিচয় দিয়েছে। ভারতের মুসলিমবিদ্বেষীর কর্মকাণ্ডকে সম্মিলিতভাবে রুখে দিতে হবে। তিনি হরিয়ানায় খুনের প্রতিবাদে বাংলাদেশ সরকারকে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের দাবি জানান।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, হাফেজ রেজাউল হত্যায় আবারো আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেখল দেশবাসী। গত ২৮ জুলাই বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের কথিত শান্তি সমাবেশে কেরাণীগঞ্জের বর্তমান এমপি কামরুল ইসলাম ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ গ্রুপের মধ্যে মারামারির সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় নিরীহ পথচারী হাফেজ রেজাউল করিমকে। সরকার এই ঘটনাকে লুকাতে চেয়েছিল।

তিনি খুনিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়ে বলেন, সরকার আবারো অবৈধভাবে ক্ষমতায় যেতে চায়। জনগণ এই সরকারকে এক মুহূর্তও চায় না। তিনি ঢাকার দুই মেয়রকে ব্যর্থ মেয়র হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা শুধু একজন নিরীহ হাফেজকে হত্যাই করেনি; সেই সঙ্গে একটি পরিবারের হাল ধরার একমাত্র অবলম্বনকে শেষ করে দিয়েছে। একজন কুরআনের হাফেজ ও মেধাবী ছাত্রকে নির্মমভাবে হত্যায় গোটা জাতি স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের আসল চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে। তিনি  রেজাউল হত্যা এবং ভারতের হরিয়ানায় মুসলমানদের হত্যা একই সুতোঁয় গাঁথা বলে মন্তব্য করেন।

সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে পল্টন মোড়, বিজয়নগর গিয়ে সমাপ্ত হয়। এ সময় তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দেন।

আপন দেশ/এমএমজেড

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়