Apan Desh | আপন দেশ

রাজশাহীতে স্ত্রীসহ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৩৩, ১ জানুয়ারি ২০২৪

রাজশাহীতে স্ত্রীসহ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ছবি: আপন দেশ

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহাদত আলী শাহু। তিনি কোটিপতি, তার স্ত্রী নাজমা আলীরও সম্পদ আছে অঢেল। দুজনের সম্পদের তথ্য পেয়ে অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবৈধ সম্পদ অর্জনের সূত্রও মেলে কমিশন কর্মকর্তাদের। এর ধারাবাহিকতায় স্ত্রীসহ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি।

শাহু ও নাজমার বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে গতকাল রোববার। রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

শাহাদত আলী শাহু ও নাজমা আলী মহানগরের শাহ মখদুম থানার উত্তর নওদাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এলাকায় দুজনের নামে বেশ কয়েকটি বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে। এত সম্পদ নিয়ে সিটির অন্যান্য সব কাউন্সিলদের মধ্যে শাহুই সবচেয়ে বেশি ধনী।

সোমবার (১ জানুয়ারি) এসব তথ্যসহ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাজশাহীর দুদক। 

সংস্থার তথ্যমতে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়ে কাউন্সিলর শাহু ও তার স্ত্রী নাজমার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়। একপর্যায়ে দুজনকে তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। এতে শাহু তার নামে ৯ কোটি ৬৮ লাখ ৫৩ হাজার ৫০৪ টাকার এবং নাজমার নামে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৫৪ হাজার ৩৭৬ টাকার সম্পদ দেখান।

আরও পড়ুন>> আ.লীগের ভোট চুরির প্রয়োজন হয় না

কিন্তু অনুসন্ধানে দুদক দেখতে পায়, শাহুর নামে ১১ কোটি ৯৩ লাখ ১৫ হাজার ৫০৪ ও নাজমার নামে ২ কোটি ৩৬ লাখ ৩৪ হাজার ৬২৬ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ আছে। এই কাউন্সিলরের ২ কোটি ২৪ লাখ ৬২ হাজার ও নাজমা ৩৯ লাখ ৮০ হাজার ২৪৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুদক আরও জানায়, মোট সম্পদের শাহুর ৭ কোটি ২৮ লাখ ৫১ হাজার ৫০৩ টাকাই তার আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। আর তার স্ত্রীর আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ আছে ১ কোটি ৬ লাখ ৬ হাজার ৯২৬ টাকার। অর্থাৎ মোট সম্পদের বড় অংশই তারা অবৈধ পন্থায় অর্জন করেছেন। এতে তারা দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। দুটি মামলাতেই দুজনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন, দুদকের কাছে তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, শাহাদাত আলী নিজ এলাকায় জমি কেনাবেচার ব্যবসা করে বিপুল অর্থ, বাড়ি, গাড়ি ও বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। গত বছর সিটি নির্বাচনে হলফনামায়ও তিনি বিপুল সম্পদের বর্ণনা করেছেন। স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন এ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নিজ এলাকা ও আশপাশের এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে মানুষের জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামায় শাহু বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ১ কোটি ১০ লাখ ৭৮ হাজার ২১৪  টাকা। ব্যাংকে জমা দেখানো হয়েছে ৩ কোটি টাকা। নগদ টাকা দেখানো হয়েছে ৫ কোটি ৬০ লাখ ৩৭ হাজার ৫১২ টাকা। স্ত্রীর বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৭ লাখ ৫০ হাজার ৪৮৫ টাকা। স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৯০০ টাকা। 

এছাড়া তার সম্পদের মধ্যে একটি প্রাডো জিপ, একটি পিস্তল, ২১ বিঘা জমি, আটি বাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে নিজের নামে পাঁচটি, স্ত্রীর নামে রয়েছে তিনটি গাড়ি।

শাহুর নামে পাঁচটি বাড়ির মধ্যে রয়েছে একটি তিনতলা বাড়ি, একটি পাঁচতলা বাণিজ্যিক ভবন, একটি তিনতলা আবাসিক, একটি পাঁচতলা আবাসিক ও দুইতলা আবাসিক বাড়ি। স্ত্রীর নামে তিনটির একটি ছয়তলা আবাসিক, নির্মাণাধীন পাঁচতলা এবং আরেকটি ১০তলা বাড়ি।

এর আগে, গত ১৪ আগস্ট কাউন্সিলর শাহাদত আলী শাহুর অবৈধ সম্পদের খোঁজে অভিযানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মহানগরের নওদাপাড়া আম চত্ত্বর এলাকায় শাহুর কার্যালয় ও বাড়িতে অভিযান চালান সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

আপন দেশ/আইএবি/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়