-ফাইল ছবি
কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রফতানির জন্য একটি বিশেষ চুক্তি করেছিল রাশিয়া। তখন মধ্যস্থাকারী ছিল জাতিসংঘ ও তুরস্ক। সেই চুক্তির মেয়াদও বাড়ানো হয়েছিল কয়েক দফা। তবে গত ১৭ জুলাই সেই চুক্তি স্থগিত করেছে রাশিয়া। এরপর তারা জানায়, এখন থেকে ইউক্রেনের বন্দরগামী যে কোনো জাহাজকে সামরিক জাহাজ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
রাশিয়ার এমন সিদ্ধান্তের ফলে শস্যবাহী জাহাজ চলাচল কমে যাওয়ায় বিশ্ব বাজারে বাড়তে শুরু করেছে গম ও ভুট্টার দাম।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইউরোপীয় স্টক এক্সচেঞ্জে বুধবার (১৯ জুলাই) গমের দাম আগের দিনের চেয়ে ৮ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে প্রতি টন বিক্রি হয়েছে ২৫৩ দশমিক ৭৫ ইউরোতে। অন্যদিকে, ভুট্টার দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ।
শুধু ইউরোপ নয়, গমের দাম বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রেও। সেখানে এক লাফে গমের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর এটিই একদিনে এ শস্যের সর্বোচ্চ দামবৃদ্ধি।
এর আগে রাশিয়া কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রফতানির জন্য বিশেষ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার গোষণা দেওয়ার পর বিশ্বে খাদ্য সংকট আরও তীব্র হবে এবং কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানিয়েছিল হোয়াইট হাউজ।
আর রাশিয়ার এমন সিদ্ধান্তে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, শস্য চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন পুতিন। তবে এ ব্যাপারে জাতিসংঘের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
আর জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, শস্য চুক্তির মেয়াদ না বাড়ানোর রুশ সিদ্ধান্ত বিশ্বের জন্য একটি খারাপ বার্তা।
>>> আরও পড়ুন: বিশ্বে আরও তীব্র হতে পারে খাদ্য সংকট
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, কৃষ্ণসাগর চুক্তি শেষ হওয়ায় সমুদ্রের মানবিক করিডোর বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে ২০ জুলাই রাত ১২টা থেকে কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের বন্দরের দিকে যাওয়া সব জাহাজকে সামরিক জাহাজ বলে বিবেচনা করা হবে। এছাড়া জাহাজে যেসব দেশের পতাকা দেখা যাবে, তাদেরকে রুশ সরকারের পক্ষ থেকে ইউক্রেন সংঘাতে জড়িত বলে বিবেচনা করা হবে।
পুতিনের এ হুমকির পর বেসামরিক জাহাজে হামলায় ইউক্রেনকে দোষারোপের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনে হোয়াইট হাউজ। যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, তার দাবি পূরণ হলে অবশ্যই তিনি শস্যচুক্তিতে ফিরবেন।
প্রসঙ্গত গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেণে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এরপর কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিশ্বজুড়ে দেখা দেয় খাদ্য সংকট। বেড়ে যায় দাম। বিশেষ করে দরিদ্রদেশগুলোতে।
পরে জতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দেশ দুটির মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়। এর আওতায় কৃষ্ণসাগর দিয়ে এতদিন শস্য রপ্তানি করে আসছে ইউক্রেন। ওই শস্য চুক্তির অধীনে ৩ কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন ভুট্টা, গম ও অন্যান্য শস্য ইউক্রেন রপ্তানি করেছে।
গত বছর ওই চুক্তির পর বেশ কয়েকবার নবায়ন করা হয়। চুক্তির সবশেষ মেয়াদ ছিল সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত। কিন্তু বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করে রাশিয়া চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
আপন দেশ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।