Apan Desh | আপন দেশ

বইমেলা শেষ হচ্ছে আজ

সময় বাড়লেও খুশি নন প্রকাশকরা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:৩৭, ২ মার্চ ২০২৪

আপডেট: ১০:৪৩, ২ মার্চ ২০২৪

সময় বাড়লেও খুশি নন প্রকাশকরা!

ছবি : সংগৃহীত

চলতি বছরের অমর একুশে বইমেলা শেষ হবে আজ শনিবার (২ মার্চ)। শেষ দিনে মেলা শুরু হবে সকাল ১১ টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

বইমেলা শেষ হওয়ার কথা ছিল দুদিন আগে বৃহস্পতিবারই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অনুমোদনক্রমে মেলার সময় বাড়ানো হয়েছে দুদিন। বর্ধিত সেই সময় শেষ হচ্ছে আজ।

তবে বর্ধিত দিনে বিক্রি আশানুরূপ না হওয়ার কথা জানান প্রকাশকরা। তাদের দাবি দিন যে বাড়ানো হয়েছে তা ভালো করে জানেন না ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। তারা অঅরও মনে করেন, রাজধানীর বেইলি রোডের আগুনের প্রভাব পড়েছে মেলায়। 

সর্বশেষ শুক্রবার (১ মার্চ) বইমেলার ৩০তম দিনে কবিতার বই ৯০টি, গল্পের বই ৩৫টি, উপন্যাস ২৫টি, ছড়ার বই পাঁচটি, ইতিহাসের বই চারটি এবং অন্যান্য বই আটটিসহ নতুন বই এসেছে মোট ২১৯টি।

অমর একুশে বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠান বিকাল ৫টায় শুরু হবে। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা ভাষণ প্রদান দিবেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।

প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’র সদস্য-সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

এ ছাড়া সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।

অনুষ্ঠানে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করা হবে।

সাধারণত প্রাণের অমর একুশে বইমেলা হয় ২৮ দিনে। তবে এ বছর অধিবর্ষ হওয়ায় মেলা একদিন বেশি পেয়ে দাঁড়ায় ২৯ দিনে। তার ওপর ২৯তম দিনটি বৃহস্পতিবার হওয়ায় প্রকাশকদের দাবি ছিল মেলার সময় বাড়িয়ে শনিবার পর্যন্ত নেয়ার। 

আরও পড়ুন <> বইমেলা ২ মার্চ পর্যন্ত চলবে

এবারের বইমেলা শুরু থেকেই ছিল জাঁকজমকপূর্ণ। প্রথম সপ্তাহের পর থেকে মেলা পুরোদমে জমে ওঠে। এর মধ্যে আবার মেট্রো ট্রেন বইমেলায় যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। দূরত্ব ও যানজট বিবেচনায় আগে যারা বইমেলায় আসতে নিরুৎসাহ বোধ করতেন এবার মেট্রো ট্রেন তাদেরকেও নিয়ে এসেছে বইমেলায়। ফলে বিগত বছরগুলোর তুলনায় দর্শনার্থীর ভিড় এবং ভালো বেচাবিক্রি হওয়ায় প্রকাশকদের মুখেও ছিল সন্তুষ্টির ছাপ।

এ ছাড়া আবহাওয়া ভালো থাকায় প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবও পড়েনি মেলায়। ২২ ফেব্রুয়ারি অল্প সময়ের বৃষ্টি মেলার বেচা-বিক্রিতে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি করলেও তা প্রকাশক ও পাঠকদের বড় ভোগান্তির কারণ হয়নি। তবে পাঠকের অত্যধিক সমাগমের দিন মেলার ধুলোবালি কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে দর্শনার্থীদের।

এদিকে বেশি ভালো বিক্রির প্রত্যাশায় মেলা দুদিন বাড়ানোর দাবি তোলা হলেও বইয়ের বিক্রি আশানুরূপ হয়নি। পাঠক সমাগমও ততোটা বাড়েনি। প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা এজন্য ভিন্ন ভিন্ন কারণ তুলে ধরেছেন।

শুক্রবার মেলায় কথা হয় তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি কাউসার হোসেনের সঙ্গে। বেচাবিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেচাবিক্রি শুক্র-শনিবারের মতো তো হচ্ছেই না, নরমাল দিনের মতোও বলা যাচ্ছে না। অনেকে হয়তো জানেনই না যে মেলা দুদিন বেড়েছে। আবার এটিও হতে পারে- যারা বই কেনার তারা ২৯ তারিখের মধ্যেই কিনে ফেলেছেন।’

মাওলা ব্রাদার্সের বিক্রয়কর্মী তামিম হোসেন বলেন, ‘বিক্রি বা ভিড় অনেক কম। নগণ্যই বলা যায়। হতে পারে মেলার সময় বাড়ার খবরটা মানুষের মাঝে পৌঁছাতে যত প্রচার করা দরকার ছিল ততোটা প্রচার হয়নি। ফেসবুক থেকে মানুষ আর কতটাই বা নিউজ জানতে পারে।’

ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি হাসেম আলী বলেন, ‘বেচা বিক্রি নেই বললেই চলে। মালিকপক্ষ যে প্রত্যাশা নিয়ে মেলা দুদিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিল তার ধারেকাছেও নেই বেচাবিক্রি। অর্ধেকেরও কম হবে বলে মনে হচ্ছে।’

তবে অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার হিসেবে আজ পাঠক ও ক্রেতা সমাগম বেশি হওয়ার কথা ছিল। আমরাও সেরকম প্রত্যাশা করে মেলা দুদিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলাম। আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে। কিন্তু বেইলি রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড অনেকের মনে প্রভাব বিস্তার করেছে। মেলায় হয়তো তার প্রভাবটা পড়েছে। আশা করি আজ ভালো বিক্রি হবে।’

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়