Apan Desh | আপন দেশ

কারাগারে বাবার সঙ্গে দেখা করলেন মির্জা শামারুহ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:০১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

কারাগারে বাবার সঙ্গে দেখা করলেন মির্জা শামারুহ

ফাইল ছবি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেখা করলেন তার বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ। এসময় মহাসচিবের সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগমও ছিলেন। 

মির্জা শামারুহ গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় এসেছেন। তিনি জানান, মহাসচিব ভালো আছেন পত্রিকার মাধ্যমে দেশের খবর রাখছেন। 

প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন মেলেনি। নিম্ন ও উচ্চ আদাল কোনটিই তাকে জামিন দেয়নি। তবে তাকে কেন জামিন দেয়া হবে না, সেই প্রশ্নে রুল জারি করেছে উচ্চ আদালত। গত ৭ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের বেঞ্চ ওই রুল জারি করেন।

ঢাকার হাকিম ও জজ আদালতে মির্জা  ফখরুলের জামিন আবেদন নাকচ হওয়ায় হাই কোর্টে এসেছিলেন তার আইনজীবীরা।

আইনজীবী জয়নুল আবেদীন জামিন শুনানিতে বলেন, ঘটনা ঘটেছে মির্জা ফখরুল যেখানে ছিলেন সেখান থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। সেখানে কোনো মাইক ছিল না। তিনি নির্দেশ দেননি। ওইদিন ঘটনা ঘটেছে সত্য, কিন্তু তিনি কোনো পরিকল্পনা করেননি।

এ মামলার আরেক আসামি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর যে দায়রা আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন, সে কথা তুলে ধরে আইনজীবী বলেন, সেই বিবেচনায়ও হাই কোর্ট মির্জা ফখরুলকে জামিন দিতে পারে। মির্জা ফখরুল অসুস্থ জানিয়ে আদালতে চিকিৎসার কাগজপত্রও জমা দেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।

শুনানি শেষে বেঞ্চের সিনিয়র বিচারক আইনজীবীদের কাছে জানতে চান, তারা রুল নেবেন, নাকি ‘নট প্রেস’ করবেন। এরপর তারা রাজি হলে আদালত আদেশ দেয়।

জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘সরকার পতনের’ এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। ২০ শর্তে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ। সেদিন দুপুরের আগে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরুর পর কাছেই কাকরাইল মোড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। শান্তিনগর, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং দৈনিক বাংলা মোড় এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।

সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ বক্সে আগুন দেয়া হয়। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেয়া হয়, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করা হয় আরো ডজনখানেক যানবাহন। হামলা করা হয় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে।

দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘাতে প্রাণ যায় যুবদলের মুগদা থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা শামীম মোল্লার।

সংঘর্ষের মধ্যে পণ্ড হওয়া সমাবেশ থেকেই পরদিন সারাদেশে হরতালের ডাক দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৯ অক্টোবর সেই হরতালের সকালে গুলশানের বাসা থেকে ফখরুলকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। সেদিন রাতে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় রমনা থানার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মির্জা ফখরুলকে আদালতে তোলা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, সেদিন মহাসমাবেশে আসা বিএনপি নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা, লোহার রড, ইট পাটকেল ও ককটেলসহ বিভিন্ন মারাত্মক অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে ‘বেআইনি সমাবেশ ঘটিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান’ দেয় এবং মিছিল করতে থাকে। ওই সময় তারা বৈশাখী পরিবহনের বাসসহ একাধিক বাস, পিকআপ ভাঙচুর করে আনুমানিক ২০ লাখ টাকার ক্ষতি করে।

মিছিলকারীরা বিএনপির ‘শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নির্দেশে পরিকল্পিতভাবে’ রাস্তায় জনসাধারণ ও যানবাহনের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, যানবাহনের ক্ষতিসাধন, জনমনে আতঙ্ক, ত্রাস সৃষ্টি করে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দেয় এবং হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুলিশ সদস্যদের আহত করে।

তারা প্রধানবিচারপতির সরকারি বাসভবনের পূর্ব পাশের গেইট ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। নামফলকসহ ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

২৯ অক্টোবর ঢাকার মহানগর হাকিম শফি উদ্দিন জামিন নাকচ করে মির্জা ফখরুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে জজ আদালতে যান মির্জা ফখরুলের আইনজীবীরা। কিন্তু ২২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদেরও জামিন নামঞ্জুর করেন। 

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ