Apan Desh | আপন দেশ

হরতালের ভোট

কার ডাকে ভোটারদের সাড়া?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ৬ জানুয়ারি ২০২৪

কার ডাকে ভোটারদের সাড়া?

প্রতীকী ছবি

রাত পোহালেই ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ের ভোট। আছে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ভোটকেন্দ্র। মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, পুলিশ, আনসার, বিজিবির লাখ লাখ সদস্য। তবুও ডানে-বায়ে পুড়ছে গাড়ি, মরছে মানুষ। উদ্বিগ্ন ভোটার। এরই মধ্যে ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। খুঁজে নিতে বলেছেন নতুন সরকার।

অন্যদিকে কেন্দ্রে না গিয়ে ঘরে থাকার অনুরোধ করছেন সরকার বিরোধীরা। তারা বলছে, ডামি নির্বাচনে আছে ডামি ভোটারও। তাই ভোটকেন্দ্রে যাওয়া না যাওয়া একই কথা। এমন পরিস্থিতিতে কার ডাকে সাড়া দেবেন ভোটার।

রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ। সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন। পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রার্থীরা। আর প্রিসাইডিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন ইসি। কড়া নিরাপত্তায় উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে ব্যালট পেপার। সকালে পৌঁছাবে কেন্দ্রে।

আরও পড়ুন>> ‘এ নির্বাচন কর্তৃত্ববাদী শাসনের আরেকটি পদক্ষেপ’

দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ৪৪টি। এর মধ্যে নির্বাচনী মাঠে ২৮ দল। বিএনপিসহ ১৬টি দল নির্বাচন বয়কট করেছে। তাদের সঙ্গে আছে ছোট-বড় আরও দুই ডজন রাজনৈতিক দল। নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে তারা। শান্তিপূর্ণ নানা কর্মসূচির পর হরতাল ডেকেছে ভোটের দিন। 

সংসদীয় ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯ আসনে ভোট হচ্ছে। স্থগিত আছে নওগাঁ-২। এবারের ভোটের লড়াইয়ে প্রার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৯৭০ জন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২৬৬, তাদের মিত্র জাতীয় পার্টির ২৬৫, কিংস পার্টি খ্যাত তৃণমূল বিএনপির ১৩৫, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ৫৬ জন। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪৩৬ জন। এর মধ্যে ৯০ জন নারী ও ৭৯ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

ছোট দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনী মাঠে আছে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল)।

আরও পড়ুন>> নির্বিঘ্নে ভোট দিন: সিইসি

ভোটগ্রহণের জন্য ৪২ হাজার ২৫ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ আখ্যায়িত করেছে নির্বাচন কমিশন। অপেক্ষাকৃত দুর্গম ২ হাজার ৯৬৪ কেন্দ্র থেকে ফলাফল আসছে ইসির মোবাইলে। ভোট গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। 

এবারের নির্বাচনে ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ পুরুষ, ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ নারী এবং ৮৫২ জন তৃতীয় লিঙ্গ।

নিষেধাজ্ঞা
নির্বাচন উপলক্ষে ৭২ ঘণ্টা মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ। এ সময় শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসনের সদস্য ও অনুমোদিত পর্যবেক্ষক, জরুরি সেবার যানবাহন, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অভিন্ন কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং সংবাদপত্র বহনকারী সব ধরনের যানবাহন, দূরপাল্লার যানবাহন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের ক্ষেত্রে এ বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় মহাসড়ক, প্রধান আন্তঃজেলা রুট, মহাসড়ক এবং প্রধান মহাসড়কের সংযোগ সড়কের ক্ষেত্রেও থাকবে একই বিধান। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

নিরাপত্তায় যারা
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় সাড়ে ৭ লাখ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এর মধ্যে ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৪৩ আনসার সদস্য। বাকিদের মধ্যে রয়েছে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। গত ৩ জানুয়ারি থেকে ভোটের মাঠে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। থাকবেন ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত।

দেশের আট বিভাগে ২ হাজারেরও বেশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন। বিভিন্ন অপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে মাঠে আছেন আরও ৬৫৩ বিচারিক হাকিম। তারা ভোটের আগে-পরে পাঁচ দিন দায়িত্ব পালন করবেন।

আরও পড়ুন>> ‘হরতালকে ভোঁতা অস্ত্র বানিয়েছে বিএনপি’

পর্যবেক্ষক
১৮৬ জনের মধ্যে ১২৭ পর্যবেক্ষক আর ৫৯ জন বিদেশি গণমাধ্যম কর্মীকে অনুমতি দিয়েছে কমিশন। এছাড়া নির্বাচন দেখতে দেশি ২০ হাজার ৭৭৩ পর্যবেক্ষক থাকছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে ২২ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন করেছে ইসি। নির্দেশনা অনুযায়ী, মনিটরিং সেল ৭২ ঘণ্টা পরিচালনা করা হবে।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়