Apan Desh | আপন দেশ

মোবাইলে দিনে লেনদেন ৪ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:১৬, ২১ মার্চ ২০২৪

মোবাইলে দিনে লেনদেন ৪ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা

ছবি: সংগৃহীত

হাতের মুঠোয় থাকা মোবাইল ফোনে ঘরে বসে খোলা যায় হিসাব। শহর থেকে গ্রামে মুহূর্তেই পাঠানো যাচ্ছে অর্থ। কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, ঋণ গ্রহণসহ যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন পরিষেবা। বিদেশ থেকে আসছে রেমিট্যান্স। ফলে বিকাশ, রকেট, নগদের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবার (এমএফএস) ওপর মানুষের আগ্রহের পাশাপাশি বাড়ছে নির্ভরশীলতা। গ্রাহকের সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও।

বুধবার (২০ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক এমএফএস হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে— বিকাশ, রকেট, নগদের মতো মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এ অঙ্ক এযাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড লেনদেন।

এর আগে, একক মাসে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল গত বছরের জুনে ১ লাখ ৩২ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেলেন সঙ্গে দিনদিন বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা। বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ নানা নামে ১৩টির মতো ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে। ২০২৪ সালের জুন মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি ৯১ লাখ ৭৩ হাজার জন। গ্রাহক বেশি হওয়ার কারণ অনেক গ্রাহক একাধিক সিম ব্যবহার করছে। লেনদেনের সুবিধার্থে একাধিক সিমের হিসাব খুলছে।

নিবন্ধিত এসব হিসাবের মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১২ কোটি ৭১ লাখ ৮১ হাজার ও নারী ৯ কোটি ১৩ লাখ ৭৯ হাজার। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৩৯ হাজার ৩২১।

এখন গ্রাহক ঘরে বসেই ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহকসম্পর্কিত তথ্য) ফরম পূরণ করে সহজেই এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে হিসাব খুলতে পারছেন।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে এমএফএসের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সিংহভাগই বিকাশের দখলে। এরপর ‘নগদ’-এর অবস্থান।

আরও পড়ুন>> ব্যাংকিং সেবার বাইরে ৫১ শতাংশের বেশি মানুষ

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেয়া হচ্ছে। 

এছাড়া এখন গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মী ও গৃহপরিচারিকাদের বেতনও এখন দেয়া হচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবা মাধ্যম ব্যবহার করে। পোশাকখাতসহ শ্রমজীবীরা এমএফএস সেবার মাধ্যমে গ্রামে টাকা পাঠাচ্ছেন। যার ফলে দিনে দিনে নগদ টাকার লেনদেন কমে আসছে। এ প্রবণতা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জানুয়ারি মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পাঠানো হয়েছে ৪০ হাজার ২২৮ কোটি টাকা আর উত্তোলন হয়েছে ৩৭ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা। এ সময় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ৩৫ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় ৪ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন পরিষেবার ২ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটায় ৫ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়। এছাড়া ৫৯৩ কোটি টাকার প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়