Apan Desh | আপন দেশ

ফাঁকা ঢাকাতেও মাংস-সবজির বাজার চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:০২, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফাঁকা ঢাকাতেও মাংস-সবজির বাজার চড়া

ফাইল ছবি

ঈদের ছুটি শেষে অফিস-আদালত খুলেছে। কিন্তু নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের বেশিরভাগই ঢাকায় ফেরেনি। ফাঁকা ঢাকার বাজারে ক্রেতার আনাগোনা খুবই কম। তবু গরু, খাসিসহ সব ধরনের মুরগির মাংসের দাম বাড়তিই আছে। চড়া আছে সবজির দামও। 

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকা কেজি দরে, পাশাপাশি ভালো মানের খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা দরে, সোনালী মুরগি প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, কক প্রতি কেজি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, বড় আকারের সোনালী মোড়গ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকায়। এ ছাড়া দেশি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০‌ টাকায়। 

এদিকে রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। প্রতিটি সবজি কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ পরবর্তী সব ধরনের সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকায়, শসা ৫০ টাকা, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০  থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ধুন্দুল ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, সজনে ১৬০ টাকা এবং কাঁচা আম প্রকারভেদে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, শিম ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, বাঁধা কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, ব্রুকলি ৪০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা এবং গাজর ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।  

লেবুর হালি ২০ থেকে ৬০ টাকা, ধনেপাতা কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে।

এ ছাড়া বাজারগুলোতে লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০ টাকা, মূলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, কলমি  শাক ১০টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এসব বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে আলু ৪৫ টাকা আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়, হাঁসের ডিম ১৮০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

শুক্রবার বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১৪০০ টাকা, এক কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকায়, মাগুর মাছ ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, পাঙ্গাস ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায়, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়,  তেলাপিয়া ২২০ টাকায়,  কৈ ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৬০০  টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৬০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, দেশি কই ১০০০ টাকা, মেনি মাছ ৭০০ টাকা, সোল মাছ ৬০০ থেকে ১০০০টাকা। এ ছাড়া বেলে মাছ ৭০০ টাকা এবং কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন <> ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে যা বলছে ইরান

গরুর মাংস বাড়তি দামে বিক্রি হওয়া বিষয়ে বনানী বাজারের মাংস বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ঈদের সময় গরুর মাংসের দাম বেড়েছে, সে সময় ৮০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের পর ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় বেশি মাংস বিক্রি করা যাচ্ছে না, সে কারণে একটু বেশি দর ধরে লোকসান পোষানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বর্তমানে গরুর বাজারেই সব ধরনের গরুর দাম বাড়তি যাচ্ছে, এরপর গুরু আনার খরচ, পরিবহন খরচ, রাস্তা খরচ, কর্মচারী খরচ, দোকান ভাড়া সবমিলিয়ে ৭৮০ টাকায় মাংস বিক্রি করলেও লোকসান গুণতে হয়।

গরুর মাংস কিনতে আসা ক্রেতা মাসুদুর রহমান বলেন, যেকোনো অজুহাতে যেকোনো উপলক্ষ্যে গরুর মাংসের দাম বাড়িয়ে দেয় বিক্রেতারা। সাধারণ ক্রেতারা বলতে গেলে তাদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকে। 

অন্যদিকে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম বেড়ে যাওয়া বিষয়ে মহাখালী বাজারের বিক্রেতা লাল মিয়া বলেন, ঈদের সময় থেকেই সব ধরনের মুরগির দাম বাড়তি ছিল। সব খামারিরা ঈদকে টার্গেট করেই মুরগি বড় করেছিল, ঈদের সময় বেশিরভাগ মুরগি বিক্রি হয়ে যাওয়ার কারণে বর্তমানে বাজারে মুরগি সরবরাহ কিছুটা কম। 

মালিবাগ বাজারে মুরগি কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী লতিফুর রহমান বলেন, যে ব্রয়লার মুরগি কিছুদিন আগে প্রতি কেজি ১৮০ টাকা করে কিনলাম, সেই ব্রয়লারই আজ কিনতে হল ২৪০ টাকা কেজি। হুটহাট এভাবে যখন তখন ব্রয়লারসহ অন্যান্য মুরগির দাম বেড়ে যাচ্ছে, কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না। 

এদিকে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সয়াবিন তেলের নতুন দাম ঘোষণা করেন। তাতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম চার টাকা বাড়ানো হয়েছে। তবে খোলা সয়াবিনের লিটারে কমানো হয়েছে দুই টাকা। এ ছাড়া পাঁচ লিটারের বোতলে দর বেড়েছে ১৮ টাকা।

ঘোষণা হলেও বাজারে নতুন দামের তেল এখনো আসেনি। অর্থাৎ আগের দামে চার টাকা কমে তেল কেনা যাচ্ছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দু-একদিনের মধ্যেই নতুন দামের তেল সরবরাহ করবে কোম্পানিগুলো।

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়