Apan Desh | আপন দেশ

বিএনপির জন্য আরও কঠিন সময়

আফজাল বারী

প্রকাশিত: ১৬:২১, ২৪ নভেম্বর ২০২৩

বিএনপির জন্য আরও কঠিন সময়

ফাইল ছবি

বিএনপি নেতাদের জন্য অঘোষিত নিষিদ্ধ হয়ে আছে দলীয় কার্যালয়। নিজ বাসা-বাড়ীও হয়ে উঠেছে অনিরাপদ। সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে নানা কৌশলে রাজপথে রয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। বিএনপির কর্মসূচি অবরোধ, হরতাল ২/১ দিনের জন্য বিরতি থাকলেও দলটির নেতাকর্মীদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলমান। পলাতক ও কারবন্দি নেতাদের বিরুদ্ধে একেরপর এক নানা মেয়াদে সাজার রায় দেয়া হচ্ছে।  

এদিকে বিএনপি যাতে চলমান আন্দোলন জোরদার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। সারা দেশে ২০১৩-১৪ ও ২০১৮ সালে অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামিদের তালিকা তৈরি করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী 'সন্দেহভাজন সমস্যা সৃষ্টিকারীদের' নতুন তালিকাও তৈরি করছে।

সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, চলমান আন্দোলন, বিদেশী চাপে সরকারের মধ্যে বেশ ভীতি কাজ করছে। যে কারণে আন্দোলন দমাতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের ফাঁরাক তুলে একাকার করে দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে বৈধ অস্ত্র আর ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ব্যবহার করছে দেশীয় অস্ত্র লাঠিসোঠা।

অন্যদিকে বিরোধীদের মামলার রায় কার্যক্রম চলছে দিবানিশি। ইতোমধ্যে বেশ কিছু নেতার জেল হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়া চলছে জোরেসুরে। রাষ্ট্রের সকল অর্গানের সর্বোচ্চ ব্যবহার শুরু হলে বিএনপির সামনের দিন আরও কঠিন হতে পারে বলে মনে করছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নুরুল আমিন বেপারী। 

আরও পড়ুন<<>> বিএনপি-জামায়াত খুঁজে বের করে ধরিয়ে দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

পুলিশ সূত্র জানায়, সারা দেশে পুলিশ ২০১৩-১৪ ও ২০১৮ সালে অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামিদের তালিকা তৈরি করছে। 'সন্দেহভাজন সমস্যা সৃষ্টিকারীদের' নতুন তালিকাও তৈরি করছে। তালিকায় যাদের নাম এসেছে, তাদের বেশিরভাগই বিএনপির নেতাকর্মী। পুলিশ সাধারণভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নজর রাখছে এবং তাদের অনলাইন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে।

শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা সব মেট্রোপলিটন কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তাদেরকে 'সমস্যা সৃষ্টিকারীদের' তালিকা তৈরি করতে বলেছেন।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, র‌্যাবকেও এ ধরনের তালিকা তৈরি ও নজরদারি জোরদার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের সব ইউনিটকে ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে টহল বাড়াতে বলা হয়েছে এবং 'ঝামেলা সৃষ্টিকারীদের' গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে। গত ১৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকেও একই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিএনপি মনে করে, এসব উদ্যোগ সরকারের 'মাঠ থেকে বিরোধী দলকে নির্মূল করার' পরিকল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়।

আরও পড়ুন <<>> রোববার থেকে সারাদেশে ফের ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের ডাক

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপির আরও নেতাকর্মীকে কারাগারে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ।নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে ও জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তারা এসব করছে। তার অভিযোগ, দলীয় কর্মীদের বাসা-বাড়ীতে পুলিশ-আওয়ামী লীগের হেলমেট বাহিনী মিলে হানা দিচ্ছে। নেতাকর্মীকে বাড়ীতে না পেয়ে তাদের বাবা, ভাই ও স্বজনদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বাসা-বাড়ীতে ভাংচুর করছে। তবে এসব করে পার পাবে না, বিএনপির আন্দোলনে এখন সাধারণ মানুষ সম্পৃক্ত হয়েছে। সরকারের বিদায় সময়ের ব্যাপার-যোগ করেন রিজভী। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৮ নভেম্বর বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, কেউ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে। এরআগে তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি-জামায়াত গাড়ীতে আগুন দিচ্ছে। সারা দেশে তাদের খুঁজে বের করে ধরিয়ে দিতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।   

নির্বাচনে বাধা দিতে পারে এমন বিএনপি কর্মীদের 'মোকাবিলা' করতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের জন্য দলের প্রত্যেক ইউনিটকে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে ২০ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমরা নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত থাকব। কিন্তু বিএনপিকে রাজপথে ছাড় দেবো না। প্রচারণা চালিয়ে যাব এবং একইসঙ্গে তাদের মোকাবিলা করব।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়